
ছবি: সংগৃহীত
ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন জামালপুরের মেলান্দহ পৌরসভার ছেন্ন্যা এলাকার হাতেম আলী। ইউটিউবে ড্রাগন চাষিদের সফলতার গল্প দেখে এই ফল চাষে আগ্রহী হন তিনি। যদিও এখনো প্রত্যাশিত লাভ পাননি, তবে হতাশ নন। তার বিশ্বাস, এ খাতে রয়েছে অপার সম্ভাবনা।
দীর্ঘদিনের অপেক্ষা আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ড্রাগনের বাণিজ্যিক চাষে সফলতা অর্জনের বিষয়ে এখন তিনি বেশ আশাবাদী।
হাতেম আলী ফরাজি (৫৫) পেশায় একজন চাকরিজীবী। পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকায়। ইউটিউবে ড্রাগন ফলের সফলতার গল্প দেখে তার মনে এই ফলের বাগান করার শখ জাগে। সেই শখকে বাস্তবে রূপ দিতে তিনি তিন বছর আগে গ্রামের বাড়ির ৮ শতাংশ জমিতে প্রায় ৩ হাজার গাছের একটি ড্রাগন ফলের বাগান করেন। এতে তার খরচ হয় প্রায় ১৫ লাখ টাকা। বাগান করার দেড় বছর পর থেকে তিনি ফল বিক্রি শুরু করেন। গত দেড় বছরে প্রায় ৭ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন তিনি। এই মৌসুমে ফলন শুরু হওয়ায় ভালো লাভের আশা করছেন।
বাগান পরিচর্যাকারী টিক্কা মিয়া জানান, ড্রাগন ফল চাষ লাভজনক একটি কৃষি উদ্যোগ। একটি বাগান প্রায় ১৫ থেকে ২০ বছর ফলন দেয়। প্রতিটি গাছে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫টি ফল ধরে। এই ফলে যেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে, তেমনি বাজারে রয়েছে চাহিদাও। তবে সমস্যা হলো—ফলটি যখন বাজারে আসে, তখন আমের মৌসুমও চলতে থাকে, ফলে আশানুরূপ দাম পাওয়া যায় না। যদিও যা পাওয়া যায়, তা অন্যান্য ফসলের তুলনায় খারাপ নয়।
বাগানের মালিক সৌখিন চাষি হাতেম আলী ফরাজি বলেন, সব চাষেই লাভ-ক্ষতি থাকে। ড্রাগন ফলেও তাই। বিভিন্ন রোগবালাই ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেক সময় ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিলাবৃষ্টি ও ছত্রাকজনিত রোগের কারণে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তবে প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে এবং পরিচর্যা সঠিকভাবে করা গেলে সফলতা পাওয়া সম্ভব।
মেলান্দহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান, মেলান্দহে বাণিজ্যিকভাবে সীমিত আকারে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। এখনো গাছগুলো ফুল-ফল ধরা পর্যায়ে পুরোপুরি পৌঁছায়নি। কারণ, ড্রাগন ফল গাছে পূর্ণাঙ্গ ফল পেতে চার বছর সময় লাগে। উঁচু জমি ও বেলে-দোআঁশ মাটিতে এই ফল ভালো হয়। দীর্ঘমেয়াদি এ আবাদে খরচ কম, লাভ বেশি—এ কারণেই দেশে এর চাষ বাড়ছে বলে জানান তিনি।
ফারুক