
ছবি: জনকন্ঠ
উপজেলার বড় কোরবানির পশুর হাট আবুতোরাব বাজার থেকে কোরবানির জন্য ৩ লক্ষ টাকা দামের গরু ক্রয় করেছেন রিফাত চৌধুরী। লাল রঙের চোখ জুড়ানো এই গরুটির চামড়া আজ বিক্রি করলেন মাত্র ৩শ টাকা।
মায়ানী ইউনিয়নের আব্দুল আওয়াল নামের একজন জানান, "গত ৫/৬ বছর ধরে কোরবানি পশুর চামড়া দাম পাওয়া যাচ্ছে না এসব চামড়া এলাকার অনেকে বোঝা মনে করে কম টাকায় বিক্রি করে দেন। তবে গত দুই তিন বছর ধরে ভালো দাম না পাওয়ায় মাটিতে পুঁতে ফেলি। এতে করে গরিব অসহায় ও এতিমরা চামড়ার টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।"
মো. শেখ ফরিদ জানান, "সরকারকে এই ট্যানারি সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে। আর ভাঙ্গতে না পারলে ভবিষ্যতে মানুষ চামড়া এভাবে বিক্রি করবে বলে মনে হয় না। ২শ ৩শ টাকায় বিক্রি না করে মাটির নিচে পুঁতে ফেলবে। গরিবের হক নষ্ট করা এসব সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে না পারলে এই শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।"
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে মানুষ এবারও পড়েছে বিপাকে। বলতে গেলে পানির দরেই বিক্রি হয়েছে পশুর চামড়া। গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা হয়েছে। ছোট গরুর চামড়া ১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। চামড়ার বাজারে ধস নামায় বঞ্চিত হয়েছেন দুস্থরা। এতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
মিরসরাই সদরে বিক্রি করতে আনা শাহাব উদ্দিন নামের এক পাইকার জানান, "উপজেলায় বেশির ভাগ এলাকায় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন কিনে আমরা বিপাকে পড়েছি। দুপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫০ টি চামড়া বিভিন্ন দামে কিনে এনেছি।" কিন্তু বাজারে এনে বিক্রি করতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। এতে লোকসান গুনতে হবে তাকে।
বড়তাকিয়া বাজারের চামড়া ব্যবসায়ী নুর উদ্দিন জানান, তিনি প্রায় ৬০০ চামড়া কিনেছেন। প্রতি পিস চামড়া ১০০-৩০০ টাকা দরে কিনেছেন। তার সবগুলো চামড়াতে শ্রমিক দিয়ে লবণ যুক্ত করতে হবে। এতে পরিবহণ খরচ ও শ্রমিকের পারিশ্রমিকের কারণে চামড়ার ক্রয়মূল্য বেড়ে যাবে।
জানা গেছে, চলতি বছর কোরবানির মৌসুমে ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা। চামড়ার আকার বড় হলে দাম আরও বেশি পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তব এমন ঘোষনার কোন মিল নেই। প্রতিবছরই কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করা নিয়ে অনেকে বিড়ম্বনায় পড়েন। প্রায়ই অভিযোগ আসে, চামড়ার ভালো দাম পাওয়া যায় না। পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। অতীতে কখনো কখনো উপযুক্ত দাম না পেয়ে চামড়া নিকটতম এতিমখানা দিয়ে দিয়েছেন।
Mily