
শিশু আদুরী
ঈদের সকাল। নতুন জামা পরে আদুরী আক্তার দাদাবাড়ির উঠানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মুখভর্তি হাসি, চোখে স্বপ্নের ঝিলিক। হয়তো ভাবছিল, এই ঈদটা হবে তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের ঈদ। কে জানত, সেটাই হবে তার জীবনের শেষ সকাল।
আজ শনিবার দুপুরে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ছাগলধরা গ্রামে দাদাবাড়িতে ঈদ করতে এসে পুকুরে ডুবে মারা যায় আদুরী (৯)। শিশুটির নামের মতোই ছিল সে, সবাইকে আদরে ভরা এক মুখ, এক চিলতে রোদ যেন।
হিন্দুকান্দি গ্রামের প্রবাসী কামরুল শাহাদাত রিপনের একমাত্র মেয়ে আদুরী। স্থানীয় একটি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। ভবিষ্যতে কী হতে চাও, জিজ্ঞেস করলে লাজুক মুখে বলত, মা-র মতো ডাক্তার হবো।"
কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। পূর্ণ হয়নি ঈদের দিনটি।
দুপুরের দিকে বাড়ির পাশের পুকুরে অন্য শিশুদের সঙ্গে গোসল করতে যায় আদুরী। সবাই মজা করছিল। হঠাৎ এক সময় সে হারিয়ে যায় পানির গভীরে। চিৎকার করে ওঠে অন্য শিশুরা। ছুটে আসে বাড়ির লোকজন। উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে, কিন্তু ডাক্তার বলেন, "মেয়েটি আর নেই।”
কেউ যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না। একটু আগেও যার মুখে ছিল টিনটিনে হাসি, সেই মুখ এখন নিথর। মা চোখে জল নিয়ে শুধু বলে যাচ্ছেন, "আদুরী ঈদের জামাটা তো পরে ছিল,ভিজেই রইল, কিন্তু আমার আদুরী ফিরল না।"
বাড়িজুড়ে কান্নার রোল। ঈদের খুশি কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। যে বাড়ি ভরে উঠেছিল অতিথির পদচারণায়, আজ সে বাড়ির আঙিনা ভরে আছে কাঁদতে কাঁদতে আসা প্রতিবেশী আর স্বজনদের ভিড়ে।
সারিয়াকান্দি থানার ওসি জামিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, "পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।"
পৃথী