ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘ডাস্টিং’ চ্যালেঞ্জ: ভয়ঙ্কর সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ডে প্রাণ গেল মার্কিন তরুণীর

প্রকাশিত: ০১:৪২, ৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ০১:৪৩, ৮ জুন ২০২৫

‘ডাস্টিং’ চ্যালেঞ্জ: ভয়ঙ্কর সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ডে প্রাণ গেল মার্কিন তরুণীর

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ডে অংশ নিয়ে প্রাণ হারালেন মাত্র ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী। অ্যারিজোনার বাসিন্দা রেনা ও’রুর্ক গত রোববার প্রাণ হারান ‘ডাস্টিং’ নামে পরিচিত এক বিপজ্জনক ট্রেন্ডে অংশ নিয়ে। চারদিন ধরে আইসিইউতে অচেতন অবস্থায় থাকার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘The Independent’ এর বরাতে জানা গেছে, রেনা ও তার প্রেমিক মিলে গোপনে অনলাইনে অর্ডার করেছিলেন কি-বোর্ড পরিষ্কার করার অ্যারোসল ক্লিনার। সেটি ইনহেল বা শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করার পরেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় তার।

রেনার বাবা অ্যারন ও’রুর্ক আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “ও সবসময় বলত, ‘আমি বিখ্যাত হবো, বাবা। দেখো, একদিন হবো।’ কিন্তু দুঃখজনকভাবে এমন কষ্টের পরিস্থিতিতে ওর নাম ছড়িয়ে পড়লো।”

কী এই ‘ডাস্টিং’ বা ‘ক্রোমিং’?

‘ডাস্টিং’, যাকে অনেকে ‘ক্রোমিং’ বা ‘হাফিং’ নামেও চেনে, একটি বিপজ্জনক ট্রেন্ড যেখানে তরুণ-তরুণীরা অতি সাধারণ গৃহস্থালির ক্লিনার ইনহেল (শ্বাসের সাথে গ্রহণ) করে ক্ষণিকের জন্য নেশার মতো এক অনুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এই সাময়িক আনন্দের পেছনে লুকিয়ে আছে মৃত্যুর সম্ভাবনা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, এটি সরাসরি হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে এবং অনেক ক্ষেত্রেই তাৎক্ষণিক মৃত্যুর কারণ হয়।

রেনার মা ডানা ও’রুর্ক বলেন, “এই ক্লিনারগুলো কিনতে কোনো আইডি লাগে না। এতে কোনো গন্ধ নেই। যা যা একজন কিশোর-তরুণ খুঁজে, তার সবই এতে আছে—সস্তা, সহজলভ্য, আর ড্রাগ টেস্টেও ধরা পড়ে না।”

রেনার বাবা-মা এখন সচেতনতামূলক প্রচারে নেমেছেন। তারা বলেন, কিশোর-কিশোরীদের জীবন বাঁচাতে অভিভাবকদের আরও সতর্ক হতে হবে। “রুম খুঁজে দেখুন, ওদের বিশ্বাস করবেন না—এই কথাটা খারাপ শোনাতে পারে, কিন্তু এমনটা করলেই হয়তো ওদের জীবন বাঁচবে,” বলেন রেনার মা।

পুরনো হলেও থামছে না এই মৃত্যুর ফাঁদ

এই ট্রেন্ড নতুন নয়। ২০২৪ সালের মার্চ মাসেই যুক্তরাজ্যে ১১ বছরের একটি শিশুর মৃত্যু ঘটে একইভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা একটি ভিডিও অনুকরণ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ১২-১৭ বছর বয়সী কিশোরদের মধ্যে ইনহেলেন্ট ব্যবহারের হার কমলেও ৫.৫ লাখেরও বেশি কিশোর এখনো এই অভ্যাসে জড়িয়ে আছে।

রেনার বাবা-মায়ের মতো অনেক পরিবারই এখন চাইছেন এই বিপজ্জনক প্রবণতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে—যাতে অন্য কোনো পরিবারকে এই বিভীষিকাময় পরিণতি দেখতে না হয়।

 

সূত্র: এনডিটিভি।

রাকিব

×