
ছবিঃ সংগৃহীত
আবারও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ ঠেকানোর দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ভাষ্য মতে, বাণিজ্যিক চাপ প্রয়োগ করে তিনি দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধ থামাতে সক্ষম হন। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই দাবিতে রাশিয়ার সমর্থনও মিলেছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এই দাবির কঠোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে, যা সরাসরি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের কাছেও তুলে ধরা হয়েছে।
এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “আমি এমন একটি বিষয় সমাধান করেছি যেটা নিয়ে মানুষ খুব বেশি কথা বলে না, আমিও না। কিন্তু আমরা একটি বড় সমস্যা, একটি পারমাণবিক সমস্যা সমাধান করেছি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে যাচ্ছিল, এবং সেটা পারমাণবিক যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াতে পারতো।”
ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তানের নেতাদের ফোনে সতর্ক করেছিলেন, যদি যুদ্ধ না থামে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সাথে বাণিজ্য স্থগিত করবে। এই হুঁশিয়ারির পর দুই দেশই হামলা বন্ধ করে।
“দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর। আমি তাদের বলেছিলাম—যদি তোমরা একে অপরকে বোমা মারছো, তাহলে আমরা বাণিজ্য করবো না। তারা উভয়েই থেমে যায়, এবং আমি সেই যুদ্ধ তৎক্ষণাৎ থামিয়ে দিই। এটা আরও এগিয়ে যেতে পারতো, এমনকি পরবর্তী রাউন্ডে পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারতো।”
ট্রাম্প বলেন, “আমি পাকিস্তান ও ভারতের নেতাদের সাধুবাদ জানাই। তারা সেই মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।”
রাশিয়ার সমর্থন: "ট্রাম্পের হস্তক্ষেপেই থেমেছিল সংঘাত"
ট্রাম্পের দাবিকে এবার রাশিয়াও সমর্থন করেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ এক বিবৃতিতে বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের বিষয় ছাড়াও ভারত-পাকিস্তান সশস্ত্র সংঘাত নিয়েও আলোচনা হয়েছিল। এটি থেমেছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপে।”
উশাকভ আরও জানান, ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ফোনালাপে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল।
ভারতের প্রতিবাদ: ‘মধ্যস্থতার প্রশ্নই আসে না’
ট্রাম্পের মন্তব্যে কূটনৈতিক অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। ভারতের কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর, যিনি একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে সরাসরি আপত্তি জানান।
থারুর বলেন, “ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সের সঙ্গে আমাদের বৈঠক ছিল অত্যন্ত ফলপ্রসূ। আমরা ভারত সরকারের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি এবং তিনি আমাদের বক্তব্য ভালোভাবেই বুঝেছেন।”
পটভূমি: সিন্দুর অভিযানের পর উত্তপ্ত পরিস্থিতি
উল্লেখ্য, ট্রাম্প এমন দাবি আগেও করেছেন, বিশেষ করে যখন ভারত ৭ মে “অপারেশন সিন্দুর” এর মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে (PoJK) সন্ত্রাসী স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে নির্ভুল হামলা চালায়। এর আগে, পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই অভিযান চালানো হয়।
পাকিস্তান পাল্টা সামরিক প্রতিক্রিয়া জানালে ভারত বিমানঘাঁটিতে জবাবি হামলা চালায়। পরে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়, যখন পাকিস্তানের ডিজিএমও (DGMO) তার ভারতীয় সমকক্ষকে ফোন করে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হন।
ইমরান