
ছবি: সংগৃহীত
ঈদের সকাল, চারপাশে আনন্দ আর তাকবির,এর ধ্বনি। নতুন জামা পরে, খুশির মুখে নামাজে যাচ্ছিলেন বাবা ও তাঁর ছোট্ট চার বছরের ছেলে। কিন্তু সেই পবিত্র যাত্রাই হয়ে উঠল তাঁদের জীবনের শেষ সফর।
আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার নয়মাইল এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন এক বাবা ও তাঁর শিশু সন্তান। নিহতরা হলেন শাজাহানপুর উপজেলার বামুনিয়া মণ্ডলপাড়া এলাকার চাঁন মিয়া (৩৫) ও তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ (৪)।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ওসি আজিজুল ইসলাম জানান, চাঁন মিয়া ও তাঁর ছেলে সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য বাড়ি থেকে বের হন। নয়মাইল এলাকায় মহাসড়ক পার হওয়ার সময় তাঁরা ডিভাইডারের ওপর দিয়ে লাফিয়ে পার হচ্ছিলেন। সেই মুহূর্তে ঢাকাগামী একটি অজ্ঞাত বাস তাঁদের দুজনকেই চাপা দিয়ে দ্রুত চলে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বাবা-ছেলে।
চোখের সামনে নিথর হয়ে পড়া দুটি দেহ একদিকে তরতাজা তরুণ বাবা, অন্যদিকে তাঁর নিষ্পাপ, উৎসাহী সন্তান মুহূর্তেই পুরো এলাকা স্তব্ধ করে দেয়। ঈদের আনন্দের বদলে নেমে আসে শোকের ছায়া।
স্থানীয়রা জানান, চাঁন মিয়া একজন সহজ-সরল মানুষ ছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ছেলেটি ছিল তাঁর চোখের মণি। ঈদের নতুন জামা পরে নামাজে যাচ্ছিল ছোট্ট আব্দুল্লাহ, হয়তো নামাজ শেষে বাবার হাত ধরে মেলায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল।
কিন্তু সব স্বপ্ন চূর্ণ হলো এক নির্মম চাকার তলায়। ঈদের খুশি হয়ে উঠল কান্না আর শোকের রঙে রঙিন।
দুর্ঘটনার পর দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এই দুর্ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, গোটা সমাজের জন্য এক চেতনার ধাক্কা। সড়কপথে নিরাপত্তার অভাব, অবহেলা আর দ্রুতগামী যানবাহনের দৌরাত্ম্য আমাদের প্রতিদিন কেড়ে নিচ্ছে প্রিয়জনদের।
আজ একটি শিশু আর তার বাবার কবর হবে পাশাপাশি ঈদের দিনে।
আসিফ