
ছবি: সংগৃহীত
ঈদ মানেই আনন্দ আর ভুরিভোজ। গরু বা খাসির মাংস দিয়ে তৈরি নানা সুস্বাদু খাবারে থাকে মসলা, তেল এবং ঘন ঘন খাওয়ার ধুম। তবে অতিরিক্ত মাংস ও মসলাদার খাবার খাওয়ার ফলে অনেকেই ঈদের দিন সন্ধ্যা থেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন গ্যাস্ট্রিক ও বুক জ্বালার মতো উপসর্গে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মসলাযুক্ত ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেলে পাকস্থলীতে অ্যাসিড নিঃসরণ বেড়ে গিয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি হয়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ঘরোয়া ও ভেষজ কিছু উপায়ে এসব সমস্যা খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
ঘরোয়া ও ভেষজ খাদ্য যেগুলো মিলিয়ে দিতে পারে স্বস্তি
১. ঠান্ডা দুধ
চিনি ছাড়া ঠান্ডা দুধ ধীরে ধীরে পান করুন। একবারেই বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে খান।ঠান্ডা দুধ প্রাকৃতিকভাবে অ্যাসিড নির্গমন কমিয়ে পেট ঠান্ডা রাখে।
২. জিরা ও ধনিয়া পানি
১ চা চামচ জিরা ও ১ চা চামচ ধনিয়া সারা রাত এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি ছেঁকে খালি পেটে পান করুন।জিরা ও ধনিয়া পাকস্থলীর প্রদাহ কমিয়ে হজমে সহায়তা করে।
৩. আদা ও তুলসী পাতার চা
১ কাপ পানিতে ১ চা চামচ কুচানো আদা ও ৫টি তুলসী পাতা দিয়ে ৫–৭ মিনিট ফুটিয়ে পান করুন। মধু যোগ করা যেতে পারে।আদা ও তুলসী প্রাকৃতিকভাবে গ্যাস্ট্রিক ও বমিভাব কমায়।
৪. পাকা কলা
দিনে ১–২টি পাকা কলা খাওয়া যেতে পারে, বিশেষ করে সকালে। কলা পাকস্থলীতে প্রাকৃতিক কোটিং তৈরি করে যা অ্যাসিড রিফ্লাক্স কমায়।
৫. সাদা চালের পাতলা ভাত বা মাড়
পাতলা সেদ্ধ ভাত বা তার মাড় হালকা গরম করে সামান্য লবণ দিয়ে খেতে পারেন। এই সহজপাচ্য খাবার পেটে চাপ না ফেলে হজমে সহায়তা করে এবং গ্যাস প্রতিরোধ করে।
৬. ভাজা চালের পানি
সামান্য সাদা চাল শুকনো কড়াইয়ে হালকা ভেজে নিয়ে পানি দিয়ে ১০ মিনিট সেদ্ধ করুন। এরপর ছেঁকে সেই পানি ঠান্ডা করে পান করুন। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘরোয়া পদ্ধতি এটি।
৭. আলসি বীজের ভেজানো পানি
১ চা চামচ আলসি বীজ ২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করুন। আলসি বীজে থাকা প্রাকৃতিক জেলি জাতীয় পদার্থ পাকস্থলীর আস্তরণ রক্ষা করে।
৮. ঘোল বা পাতলা দই
দইয়ে সামান্য বিটলবণ ও পানি মিশিয়ে ঘোল তৈরি করে পান করুন। দইয়ে প্রোবায়োটিক থাকে যা হজমে সহায়তা করে ও পাকস্থলীর পরিবেশ স্বাভাবিক রাখে।
যা এড়িয়ে চলা জরুরি
1.কোলা, কফি বা গ্যাসযুক্ত পানীয়
2.অতিরিক্ত ঝাল বা ভাজা খাবার
3.খাওয়ার পরপরই ঘুমানো
4.দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকা
পুষ্টিবিদ ফারজানা রউফ বলেন, “ঈদের দিনে ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস, প্রচুর পানি ও ঘরোয়া কিছু ভেষজ পানীয় খেলে এই ধরনের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সহজেই সামাল দেওয়া যায়।”
ঈদের আনন্দ যাতে গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় মাটি না হয়ে যায়, তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ঘরোয়া ভেষজ উপায়ে যত্ন নেওয়াই হতে পারে প্রকৃত সমাধান। অতিরিক্ত ভারী খাবার না খেয়ে পানি ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শরীর ও পেটকে রাখা যাবে সুস্থ ও আরামদায়ক।
Mily