
কোলন ক্যান্সার, যা বড় অন্ত্রের ক্যান্সার হিসেবেও পরিচিত, বর্তমানে অন্যতম বড় স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি প্রাথমিক অবস্থায় কোনো স্পষ্ট উপসর্গ দেখাতে পারে না, কিন্তু কিছু লক্ষণ রয়েছে যা দেখলেই সতর্ক হওয়া উচিত। কোলন ক্যান্সার শনাক্ত করা এবং চিকিৎসা শুরু করার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কোলন ক্যান্সারের কারণ:
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস:
বেশি প্রক্রিয়াজাত খাবার, মাংস এবং কম ফাইবারযুক্ত খাবার কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত এবং চিনিযুক্ত খাবারও সমস্যা তৈরি করতে পারে।
পরিবারে কোলন ক্যান্সারের ইতিহাস:
যদি আপনার পরিবারের কোনো সদস্য কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তবে আপনারও এটির ঝুঁকি বেড়ে যায়। পরিবারে যেকোনো সদস্যের কোলন ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
বয়স:
বয়স বাড়ার সঙ্গে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। সাধারণত ৫০ বছরের পর এ রোগের সম্ভাবনা বাড়ে, তবে বয়সের আগেই সতর্কতা নেওয়া জরুরি।
অসুস্থ জীবনযাত্রা:
নিয়মিত ব্যায়াম না করা, ওজন বাড়ানো এবং অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস (যেমন ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন) কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ:
মলাশয়ে পরিবর্তন:
মলাশয়ে পরিবর্তন যেমন দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য, অথবা মলের আকার পরিবর্তন (তিনকোণি বা সরু মল) কোলন ক্যান্সারের প্রথম লক্ষণ হতে পারে।
পেটের ব্যথা ও অস্বস্তি:
পেটের মাঝখানে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, গ্যাস বা পেট অস্বস্তি অনুভব করলে তা কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
রক্ত মলদ্বারে বা মলে রক্ত:
মলদ্বারে রক্ত দেখা বা মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়ার ঘটনা বড় ধরনের সংকেত হতে পারে, যা কোলন ক্যান্সারের সম্ভাবনা নির্দেশ করে।
অস্বাভাবিক ওজন কমে যাওয়া:
যদি কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের ওজন হঠাৎ কমে যায়, তবে তা কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
বিকল্যতাপূর্ণ ক্লান্তি:
নিয়মিত ক্লান্তি বা অদ্ভুতভাবে শক্তিহীনতা অনুভব করা কোলন ক্যান্সারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হতে পারে।
কোলন ক্যান্সারের করণীয়:
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস:
অধিক ফাইবারযুক্ত খাদ্য যেমন শাক-সবজি, ফল এবং পুরো শস্য খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অতিরিক্ত মাংস ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
নিয়মিত ব্যায়াম:
শারীরিক পরিশ্রম নিয়মিত করার মাধ্যমে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো যায়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত।
রুটিন চেকআপ:
৫০ বছর বয়সের পর কোলন ক্যান্সার স্ক্রীনিং করানো উচিত। এটি কোলন ক্যান্সারের প্রাথমিক স্তর শনাক্ত করতে সহায়ক।
অ্যালকোহল এবং ধূমপান কমান:
অ্যালকোহল এবং ধূমপান কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এই দুটি অভ্যাস কমিয়ে বা বন্ধ করে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করা যায়।
কোলন ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ হলেও প্রাথমিক অবস্থায় সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা সম্ভব। তাই নিয়মিত স্ক্রীনিং এবং সতর্কতার মাধ্যমে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
রাজু