
ছবি: সংগৃহীত
গরমকাল হোক বা বর্ষা, খাবারের তালিকায় টকদই যেন এক বিশ্বস্ত নাম। ভাতের সঙ্গে, ফলের সঙ্গে বা এমনকি নাস্তার টেবিলেও—এই এক উপাদানেই আছে স্বাদ, স্বাস্থ্য এবং হজমের চাবিকাঠি। শুধু খাবারই নয়, চিকিৎসা ও রূপচর্চাতেও এর ব্যবহার আজকাল চোখে পড়ার মতো।
ঐতিহাসিক ছাপ
টকদইয়ের ব্যবহার ইতিহাসে বেশ পুরোনো। প্রায় ৪০০০ বছর আগে ভারতীয় উপমহাদেশে এবং মধ্যপ্রাচ্যে খাদ্য ও চিকিৎসা হিসেবে এর চর্চা শুরু হয়। আয়ুর্বেদ ও গ্রিক চিকিৎসাতেও টকদইকে পেটের জন্য ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
পুষ্টিগুণে ভরপুর
টকদই হলো একপ্রকার প্রাকৃতিকভাবে গাঁজনপ্রাপ্ত দুগ্ধজাত খাবার, যাতে থাকে:
-
প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া: যেমন Lactobacillus bulgaricus ও Streptococcus thermophilus—হজমে সহায়ক ও অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়ায়।
-
ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস: হাড় ও দাঁতের গঠন ও শক্তিতে ভূমিকা রাখে।
-
প্রোটিন: শরীরের কোষ মেরামতে সহায়ক।
-
ভিটামিন বি১২, বি২, ডি: স্নায়ু, ত্বক ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য উপকারী।
স্বাস্থ্যে অবদান
-
হজমের সহায়তা: খাবার সহজে হজমে সাহায্য করে, গ্যাস-অম্বল কমায়।
-
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে: প্রোবায়োটিক উপাদান শরীরকে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে।
-
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কম ক্যালরিযুক্ত হওয়ায় ক্ষুধা কমায়, ডায়েটের অংশ হতে পারে।
-
রক্তচাপ ও হৃদরোগে উপকারী: কম চর্বিযুক্ত টকদই উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
-
রূপচর্চায় ব্যবহার: মুখে ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহারে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়।
কীভাবে খাবেন?
-
সকালে বা দুপুরে ভাতের সঙ্গে খাওয়া যায়।
-
মধু বা ফল মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন স্বাস্থ্যকর ডেজার্ট।
-
স্মুদি, লাচ্ছি, রায়তা বা সালাদেও ব্যবহার হয় দারুণভাবে।
-
রূপচর্চায় মুলতানি মাটি, মধু বা হলুদের সঙ্গে মিশিয়ে ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
সতর্কতা
-
যাদের দুধজাত খাবারে অ্যালার্জি আছে বা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স রয়েছে, তাদের সাবধানে খাওয়া উচিত।
-
ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থাকলে ঠান্ডা টকদই খাওয়া এড়িয়ে চলা ভালো।
-
খোলা বাজারের দইয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকতে পারে—বিশুদ্ধ ও ফ্রেশ উৎস থেকে কেনাই ভালো।
মুমু ২