
ছবি: সংগৃহীত।
বন্ধুর পাঠানো একটি হাসির ছবি, অফিসের গুরুত্বপূর্ণ মেমো কিংবা প্রিয়জনের তোলা একটি সেলফি—হোয়াটসঅ্যাপে প্রতিদিনই অগণিত ছবি আসে-যায়। কিন্তু জানেন কি, এই নিরীহ ছবির আড়ালেই লুকিয়ে থাকতে পারে আপনার সর্বনাশ?
সাম্প্রতিক সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষণে উঠে এসেছে ভয়াবহ তথ্য—হোয়াটসঅ্যাপে আসা একটি সাধারণ ছবির মাধ্যমেই আপনার স্মার্টফোনে ঢুকে পড়তে পারে ম্যালওয়্যার, যা চুপিসারে হাতিয়ে নিতে পারে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ওটিপি, পাসওয়ার্ডসহ যাবতীয় স্পর্শকাতর তথ্য।
এই নতুন হুমকির পেছনে রয়েছে একটি প্রযুক্তি—স্টেগানোগ্রাফি। এটি এমন এক কৌশল, যার মাধ্যমে কোড বা ভাইরাস লুকিয়ে দেওয়া হয় ছবির প্রতিটি পিক্সেলের ভেতরে। জেপিজি, পিএনজি, এমনকি ছোট ভিডিওতেও এই কোড লুকানো যায়। আপনি যখন ছবিটি ওপেন করেন বা ডাউনলোড দেন, তখনই তা সক্রিয় হয়।
সাধারণ অ্যান্টিভাইরাস এই ম্যালওয়্যার শনাক্ত করতে পারে না। কারণ এটি ছবি হিসেবে আচরণ করে এবং বাইরের ভাইরাসের মতো আচরণ করে না। একে চিহ্নিত করতে প্রয়োজন ডিজিটাল ফরেনসিক ও বিহেভিয়রাল অ্যানালাইসিস প্রযুক্তি।
আপনি কীভাবে নিরাপদ থাকবেন?
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই কিছু সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করে বড় বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।
- মিডিয়া অটো-ডাউনলোড বন্ধ করুন: হোয়াটসঅ্যাপ সেটিংসে গিয়ে অটো-ডাউনলোড অপশন বন্ধ করুন।
- অপরিচিত নম্বর থেকে আসা ছবি বা ভিডিও ডাউনলোড করবেন না।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ওটিপি, পাসওয়ার্ড—এসব স্পর্শকাতর তথ্য হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করবেন না।
- বিশ্বাসযোগ্য অ্যান্টিভাইরাস ও নিরাপত্তা অ্যাপ ব্যবহার করুন।
সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, “তথ্যই এখন সবচেয়ে বড় সম্পদ। আর সেই সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই।” কারণ একটি ছবি এখন আর শুধু ছবি নয়—তা হতে পারে নিঃশব্দ এক ডিজিটাল ঘাতক।
সতর্ক থাকুন, প্রযুক্তির আশীর্বাদকে অভিশাপ হতে দেবেন না। আপনার সামান্য সচেতনতাই আপনাকে রাখতে পারে বড় সাইবার বিপদ থেকে নিরাপদ।
নুসরাত