ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিবিসি বাংলাকে ওবায়দুল কাদের

দেশে ফিরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ পেলে তখন অনুশোচনার প্রশ্ন আসতে পারে

প্রকাশিত: ১২:০৭, ৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ১২:০৮, ৬ জুন ২০২৫

দেশে ফিরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ পেলে তখন অনুশোচনার প্রশ্ন আসতে পারে

গত বছরের জুলাই-অগাস্টে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছে শত শত মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে পাঁচই অগাস্ট পর্যন্ত সময়ে নিহতের সংখ্যা ৮৩৪ জন, আর জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, এ সংখ্যা ছিল ১,৪০০-এরও বেশি।

এই প্রাণহানির ঘটনায় দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগ সরকার ও তার শীর্ষ নেতৃত্বের কোনো অনুশোচনা বা ক্ষমা চাওয়ার লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না। বরং দলটির নেতারা বারবার এই আন্দোলনকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করছেন।

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশে ফিরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ পেলে তখন অনুশোচনার প্রশ্ন আসতে পারে। তার ভাষায়,
 

“ঘটনার বিশ্লেষণে আমাদের ভূমিকা নিয়ে কথাবার্তা আছে। দেশে শান্তি ও স্থিতি ফিরে এলে, আমরা দেশের মাটিতে রাজনীতি করতে পারলে, কোনো ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টিতে আমরা পিছিয়ে থাকবো না।”

তবে তিনি এটিও স্পষ্ট করে বলেছেন,

“দেশের বাইরে থেকে আমরা কীভাবে ক্ষমা চাইবো? সব কিছুর মূল কেন্দ্র দেশ। সেই মাটিতেই অনুশোচনা বা ক্ষমা চাওয়ার প্রতিফলন ঘটবে।”

আন্দোলন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি নিছক একটি গণআন্দোলন ছিল না, বরং সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটেছে এই সুযোগে। তার মতে, সরকার পতনের এ ঘটনাকে ‘গণউত্থান’ হিসেবে দেখার চেয়ে বরং এটিকে ষড়যন্ত্র বলাই সঙ্গত।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের অবস্থান এখনও ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’-এর মধ্যে আটকে আছে, যা তাদের বাস্তব পরিস্থিতি ও দায় স্বীকারে অনীহার ইঙ্গিত দেয়। 

ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পেলে তারা হয়তো অতীত ভুল বা অনুশোচনার বিষয়ে ভাববেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া, দায় স্বীকার বা নৈতিক অবস্থান নেওয়ার কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

তবে প্রচুর প্রাণহানির পরও আওয়ামী লীগ নেতাদের অনমনীয় অবস্থান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, দমন-পীড়ন ও ধরপাকড়ের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার চলছে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে। এরই প্রেক্ষিতে দলটির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

 

সানজানা

×