
বাংলাদেশের তাজা আম এবার সরাসরি পৌঁছে গেল চীনের চাংশা শহরে—দেশের ইতিহাসে এই প্রথম চীনে সরাসরি আম রপ্তানি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগান থেকে আসা তিন টন সেরা মানের আম এক মিনিটের মধ্যেই পেরিয়ে যায় হুনান প্রদেশের হুয়াংহুয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস চেক। চীনা কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন ছিল সরাসরি—“নো ইস্যু, পারফেক্ট কোয়ালিটি।”
এই সাফল্য শুধু কৃষিপণ্য বাণিজ্যের নয়, বরং এটি বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এক সময় যেসব আম উপহারের ঝাঁপি হয়ে দিল্লি পৌঁছাত, এখন সেই আমই বৈদেশিক মুদ্রা এনে দিচ্ছে চীনের বাজার থেকে—এবং তা ন্যায্য দামে।
২০২৪ সালের জুলাইতে চীন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ থেকে আম আমদানির অনুমোদন দেয়। তারপর থেকেই শুরু হয় নতুন রপ্তানি যুগ। চাংশা কাস্টমসের সহযোগিতায় ফলগুলো পৌঁছায় ‘ফ্রেশ এক্সপ্রেস ইউনিট’ এর মাধ্যমে, বিশেষভাবে পরিকল্পিত দ্রুত ক্লিয়ারেন্স ব্যবস্থার ফলে আম থাকে একেবারে টাটকা।
বাংলাদেশের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দেশজুড়ে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২.৭ মিলিয়ন টন, যার মধ্যে অন্তত ৫০০০ টন রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। এতদিন মধ্যপ্রাচ্যই ছিল প্রধান গন্তব্য, এবার লক্ষ্য চীনের বিশাল ভোক্তা বাজার। আর তাতে রয়েছে ব্যাগিং প্রযুক্তির মাধ্যমে কেমিক্যালবিহীন আম সরবরাহের সক্ষমতা।
২০২৪ সালে চীনের ফল আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৯.৪৫ বিলিয়ন ডলার—৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। বাংলাদেশের আমে সন্তুষ্ট চীনা ভোক্তারাও। এই রপ্তানির কূটনৈতিক দিকটি নিয়েও চলছে আলোচনা। অনেকে বলছেন, ভারতের একমুখী নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার কৌশল হিসেবে এটিই “ড. ইউনূসের আম কূটনীতি”—চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার একটি বাস্তব প্রয়াস।
মুমু