
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও কুমিল্লা থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত কোথাও যানজট নেই। মহাসড়কের দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতু টোলপ্লাজা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করতে কুমিল্লা অংশে ১২টি যানজটপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব ও জেলা পুলিশ কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিকেল ৪টায় সরেজমিনে মহাসড়কের দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোলপ্লাজা থেকে ইলিয়টগঞ্জ পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, চট্টগ্রামমুখী লেনে গাড়ির চাপ তুলনামূলক বেশি হলেও কোথাও যানজট নেই।
তবে বড় যানবাহনের তুলনায় ছোট আকারের যানবাহনের সংখ্যাই বেশি চলাচল করতে দেখা গেছে। যানজটপ্রবণ এলাকা—দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড মোড়, ইলিয়টগঞ্জ বাজার বাসস্ট্যান্ড, চান্দিনার মাধাইয়া বাজার ও চান্দিনা বাজার (বাগুর বাসস্ট্যান্ড), বুড়িচংয়ের নিমসার বাজার, কুমিল্লা সদরের ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও আলেখারচর, সদর দক্ষিণের পদুয়ার বাজারে কোথাও যানজটের দৃশ্য নেই।
তিশা পরিবহনের চালক আব্দুল খালেক বলেন, “গত ঈদে যেভাবে যানজটের কবলে পড়েছিলাম, এবার কুমিল্লা থেকে দাউদকান্দি অংশে যানজট নেই বললেই চলে। ঢাকা থেকে কুমিল্লায় তিন ঘণ্টায় যাত্রী পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে। এতে যাত্রীরাও খুশি।”
কুমিল্লার ধর্মপুর এলাকার যাত্রী শরীফ মাহমুদ খান বলেন, “অন্যান্যবার ঈদে মহাসড়কে যে পরিমাণ যানজট দেখা যায়, এবার সেই চিত্র নেই। আমরা পরিবার নিয়ে যানজটমুক্ত পরিবেশে ঈদুল আযহা পালন করতে বাড়ি ফিরতে পারছি।”
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরগামী ঢাকাএক্সপ্রেস পরিবহনের চালক নাজমুল হাসান বলেন, “মহাসড়কে যে পরিমাণ যানজট হবে বলে আশঙ্কা করেছিলাম, সেভাবে কোনো যানজট নেই। তবে যানবাহনের চাপ রয়েছে। এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় ঘরমুখো মানুষ স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে।”
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদ খান চৌধুরী বলেন, “মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ যানজটমুক্ত রাখতে হাইওয়ে পুলিশ দিনরাত সমান তালে দায়িত্ব পালন করছে। ঈদকে সামনে রেখে দাউদকান্দি অংশে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।”
হাইওয়ে পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি ও কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন,“ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ, স্বস্তিদায়ক ও নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিতে হাইওয়ে পুলিশ সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মহাসড়কে রয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন,“ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোট ২৬টি স্পটকে গুরুত্ব দিয়ে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে যানজটের সম্ভাব্য স্থান হিসেবে কুমিল্লা অংশের ১২টি স্পটকে চিহ্নিত করা হয়েছে। মহাসড়কে যেন কোরবানির পশুবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি, রাতের বেলায় ছিনতাই কিংবা ডাকাতির ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আযহাতেও নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করা।”
দাউদকান্দি থেকে কুমিল্লা মহাসড়কের অংশে যাত্রীরা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, সে বিষয়ে দাউদকান্দি বিশ্বরোডের মোহন সিএনজি পাম্পে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন র্যাব-১১-এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, “যেহেতু দেশের লাইফলাইন হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, তাই এ সড়কে যানবাহনের নির্বিঘ্ন চলাচল এবং ঈদে ঘরমুখো মানুষের স্বস্তিদায়ক যাত্রা নিশ্চিতে র্যাব সর্বাত্মকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যাতে কোনো ভোগান্তি না হয়।”
সানজানা