ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিদেশ থেকে সোনা, মোবাইল ও অন্যান্য পণ্য আনায় নতুন যে কড়াকড়ি

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ৪ জুন ২০২৫

বিদেশ থেকে সোনা, মোবাইল ও অন্যান্য পণ্য আনায় নতুন যে কড়াকড়ি

ছবি:সংগৃহীত

সরকার সদ্য ঘোষিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের পরদিন নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা জারি করেছে, যেখানে বিদেশফেরত যাত্রীদের জন্য সোনা, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন পণ্য আনার নিয়মে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই বিধিমালায় মূলত সোনা পাচার রোধে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে, পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে যাত্রীদের জন্য ছাড়ের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

 

 

আগে বিদেশফেরত যাত্রীরা প্রতি ফ্লাইটে সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি করে সোনার বার আনতে পারতেন। এখন থেকে বছরে একবারই একটি সোনার বার আনার অনুমতি থাকবে, তাও নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ সাপেক্ষে। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার ওপর ৫,০০০ টাকা হারে শুল্ক দিতে হবে, অর্থাৎ একটি বার আনতে ৫০,০০০ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এর আগে এই শুল্ক ছিল প্রতি ভরিতে ৪,০০০ টাকা।

সোনার গয়না আনার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জোরদার করা হয়েছে। আগে যাত্রীরা যতবার খুশি, ততবার ১০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনার গয়না বিনা শুল্কে আনতে পারতেন। এখন থেকে বছরে একবারই সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনার গয়না বিনা শুল্কে আনার সুযোগ থাকবে।

 

 

নতুন বিধিমালায় মোবাইল ফোন আনার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে একজন যাত্রী বছরে একবার মাত্র একটি নতুন মোবাইল ফোন শুল্ক ও কর ছাড়া আনতে পারবেন। তবে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দুটি আগের মতোই আনা যাবে। আগে প্রতিবার ফেরা সময়ে একটি করে নতুন মোবাইল ফোন শুল্ক-কর দিয়ে আনার সুযোগ ছিল।

 

 

বিমানবন্দর ও সীমান্ত পথে সোনা পাচার বাড়ার প্রেক্ষাপটে এই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রীরা প্রায় ১৪২ টন সোনা এনেছেন, যার একটি বড় অংশ পাচার হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। সীমান্তে সোনা জব্দ হওয়ার ঘটনাও এ সিদ্ধান্তের পেছনে প্রভাব ফেলেছে।

 

যাত্রীদের কিছুটা ছাড় দিয়ে ব্যাগেজ ঘোষণা করার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। আগে ভুলবশত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘোষণা না করলে আগমনের সাত দিনের মধ্যে ঘোষণা দেওয়ার সুযোগ থাকলেও, এখন সেটি বাড়িয়ে ৩০ দিন করা হয়েছে। এতে করে যাত্রীরা নিয়ম মেনে শুল্ক-কর পরিশোধ করে ছাড়পত্র নিতে পারবেন।

নির্ধারিত সীমার বাইরে অতিরিক্ত পণ্য আনলে ন্যায় অনুযায়ী শুল্ক, অর্থদণ্ড ও জরিমানা দিতে হতে পারে। এমনকি আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের ছাড়পত্রও লাগবে। তবে আমদানি নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত পণ্যের ক্ষেত্রে কোনো ব্যতিক্রম নেই।

 

 

সার্বিকভাবে, নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা বিদেশফেরত যাত্রীদের জন্য একদিকে যেমন কড়াকড়ি আরোপ করেছে, তেমনি কিছু ক্ষেত্রে ভুল সংশোধনের সুযোগও রেখেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সোনা পাচার রোধ ও শুল্ক আদায় কার্যকরভাবে পরিচালনা করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।

আঁখি

×