
মাত্র ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার জন্য নিজের শাশুড়ি ও দুই শালোককে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে জামাই রবিন। রাজধানীর ধামরাইয়ে ঘটেছে এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড। পরিবারের সদস্যই পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করেছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এক ভয়ংকর ও ঠাণ্ডা মাথার হত্যার বিবরণ।
ঘটনাটি ঘটে গেল ২ জুন। ওইদিন সকালে ধামরাইয়ের একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের তিন সদস্য—নারগিস বেগম, তার ছেলে শামীম ও মাসুদ -এর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার পর তদন্তে নামে ধামরাই থানা পুলিশ এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। চারদিনের মধ্যে তদন্তে অগ্রগতি আসে। ৪ জুন নিহত নারগিস বেগমের মেয়ের স্বামী রবিনকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরে তার দেওয়া জবানবন্দিতে পুরো ঘটনার রহস্য উন্মোচন হয়।
পিবিআই জানায়, পারিবারিক কলহ ও ডেকোরেটরের দোকান বিক্রির ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় রবিন। সে স্বীকার করে, ঘটনার দিন কৌশলে বাড়িতে ঢুকে একে একে তিনজনকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে।
পিবিআইর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, “রবিন জবানবন্দিতে জানায়, তাকে ব্যবসা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। সে মনে করত, তার শাশুড়ি ও শালোকরা তাকে দেখত না, গুরুত্ব দিত না। এই ক্ষোভ থেকেই সে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।”
জবানবন্দিতে রবিন আরও জানায়, “আমি একাই কাজটি করেছি। শামীমকে হত্যা কঠিন ছিল, তাই তাকে বালিশ দিয়ে মুখ চেপে ধীরে ধীরে মেরে ফেলি। সে শব্দ করলেও কেউ শুনতে পায়নি।”
পিবিআই আরও জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর রবিন ওই টাকাগুলো নিয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তদন্ত চলছে। টাকার হদিস পেতে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে একসাথে তিনজনের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোক ও আতঙ্ক। স্থানীয়রা এই নির্মম ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ঘটনার বিষয়ে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমরা পিবিআইয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্তে আছি। দোষী যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
এ ঘটনায় নিহত নারগিস বেগমের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মিমিয়া