
ছবিঃ সংগৃহীত
যদি প্রশ্নটি এইভাবে করা হয় কক্সবাজার কোথায় কোনদিকে নিশ্চয় আপনার আছে তার সহজ উত্তর। কক্সবাজারে প্রবেশের আরেকটি পথ আছে যে পথ ব্যবহার করতেই হবে কোন উপায় নেই। যুগের পর যুগ এই পথে চলাফেরা আছে মানুষের। এই পথে কোন মসৃণ পিচঢালা সড়ক নেই, পথ চলতে হয় একটি আলোক বাত্তি নিয়ে। যে বাতি কক্সবাজারের পথ চেনায় কিছুক্ষণ বন্ধ থাকলে জীবনের গন্তব্য হারিয়ে সমাপ্তি ও ঘটতে পারে। আর এই বাতি দেখা গেলেই কক্সবাজারের ঠিকানা মিলবে, নিশানা ছোঁয়া যাবে।
সত্যি বলতে অনেক বছর ধরে ছোট্ট একটি ঘর থেকে জ্বলে ওঠা আলোর বিকিরণে কক্সবাজার প্রবেশের পথ চিনে আসছে জেনে আসছে শত সহস্র মানুষ। আলোয় তাদের রাস্তা এবং গন্তব্যে পৌঁছাবার ঠিকানা। যেদিন কক্সবাজার থেকে আলোর ঝলক থেমে যাবে সেইদিন কক্সবাজার কে হারিয়ে ফেলবে সহস্র শতাধিক মানুষ। আবার তাদের জীবনের গতিও থমকে যাবে।
এই বাতি বিকিরণ করে কক্সবাজার থেকে। ১৯৭৬ সালে কক্সবাজার বাতিঘরটি স্থাপন করা হয়। ফোকাল প্লেন ৫৪ মিটার (১৭৭ ফুট); প্রতি ১৫ এস সাদা ফ্ল্যাশ যা প্রায় ২৪.৫ মাইল পর্যন্ত দেখা যায় ৷ প্রায় ১০ মিটার (৩৩ ফুট) কাঠামো, একটি ২ বর্গক্ষেত্রের কংক্রিটের ভবনের ছাদকে কেন্দ্র করে লণ্ঠন এবং গ্যালারীসহ একটি ছোট বর্গাকার কঙ্কাল টাওয়ার।
বাতিঘর বা লাইট হাউজ হচ্ছে এমন এক ধরনের সুউচ্চ মিনার আকৃতির দালান যা থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় আলো ফেলে সমুদ্রের জাহাজের নাবিককে দিক নির্দেশনা দেয়া হয় এবং সেই সাথে সমুদ্রের অগভীর অঞ্চল সম্পর্কে নাবিককে সতর্ক করতে বাতিঘর ব্যবহার করা হয়। এছাড়া সমুদ্র সৈকতের যেসকল এলাকায় প্রচুর প্রবাল রয়েছে এবং যেসকল প্রবালগঠন জাহাজের ক্ষতি সাধন করতে পারে এমন সব সৈকত চিহ্নিত করতে বাতিঘর ব্যবহার হয়ে আসছে।
এই বাতিঘরটি প্রায় ২৪.৫ মাইল পর্যন্ত দৃশ্যমান এবং প্রতি ১৫ সেকেন্ডে সাদা ফ্ল্যাশ আলো ছড়ায় যে আলো নাবিক এবং মাঝিকে সাহায্য করে।
বাতিঘরের আলো জাহাজকে সঠিক পথ দেখিয়ে সমুদ্রপথে যাত্রা নিরাপদ করে। বাতির আলো দূর্যোগের সময় সতর্কতা সংকেত হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
কক্সবাজার লাইট হাউস বা বাতিঘর শুধু একটি বাতিঘর নয় এটি একটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যার নামে এলাকার নামকরণ লাইট হাউস পাড়া।
ইমরান