ছবি: সংগৃহীত।
দেশের প্রচলিত আইনে পুলিশ কারও বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াও হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করতে পারে। এটি ঘটে যখন কেউ চুরির সময়, ছিনতাই বা মারামারির মতো অপরাধ সংঘটনের সময় জনগণের সহায়তায় পুলিশের হাতে আটক হয়। এ রকম পরিস্থিতিতে পুলিশ যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে।
তবে গ্রেপ্তার করলেই পুলিশ তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য হেফাজতে রাখতে পারে না। আইন অনুযায়ী, পুলিশ কোনো ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারবে। এর বেশি সময় থানায় আটক রাখা সম্পূর্ণ বেআইনি।
পুলিশ যেকোনো গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করতে বাধ্য। আদালতই সিদ্ধান্ত নেবেন ওই ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া হবে, নাকি তাকে রিমান্ডে বা কারাগারে পাঠানো হবে।
যদি পুলিশ আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন মনে করে, তাহলে আদালতের কাছে রিমান্ড চায়। আদালত যদি অনুমোদন দেন, তাহলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়। নির্ধারিত রিমান্ড শেষে পুনরায় আদালতে হাজির করতে হয়।
যদি কোনো ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় থানায় অবৈধভাবে আটক রাখা হয়, তাহলে তার পক্ষে হ্যাবিয়াস কর্পাস রিট দায়ের করা যায়। এটি সংবিধান স্বীকৃত অধিকার, যার মাধ্যমে আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিতে পারে আটক ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে আদালতে হাজির করতে।
অনেক সময় দেখা যায়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে শুরুতে জানানো হয় না, কোন মামলায় তাকে ধরা হয়েছে। পরে পুলিশ নিজেদের সুবিধামতো মামলা দেখায়। যদিও এটি বিতর্কিত ও নাগরিক অধিকার পরিপন্থী, তারপরও বাস্তবে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে।
আইন বলছে—পুলিশের একচ্ছত্র অধিকার নেই কাউকে অনির্দিষ্ট সময় আটকে রাখার। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা না হলে তা বেআইনি, এবং আপনি চাইলে উচ্চ আদালতে গিয়ে প্রতিকার চাইতে পারেন।
আপনার অধিকার জানুন, বেআইনি আটক থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।
সূত্র: https://urli.info/13I3h
মিরাজ খান
