ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ব্যাংক কী করে? ঋণ খেলাপিদের জন্য আইনি পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৬:৫৫, ৩ জুন ২০২৫

ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ব্যাংক কী করে? ঋণ খেলাপিদের জন্য আইনি পরামর্শ

ছবি: প্রতীকী

বর্তমানে নগদ অর্থের প্রয়োজনে অনেকেই ব্যাংক ঋণ নিয়ে থাকেন। কিন্তু সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কী ধরনের আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে, তা নিয়ে সম্প্রতি একটি ভিডিওতে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন ব্যারিস্টার তাসমিয়া আঞ্জুম।

তিনি বলেন, ব্যাংক সাধারণত দুই ধরনের ঋণ দিয়ে থাকেজামানতের ভিত্তিতে এবং জামানতবিহীন ব্যক্তিগত ঋণ। জামানতের আওতায় স্থাবর সম্পত্তি যেমন জমি, ফ্ল্যাট, অথবা অস্থাবর সম্পত্তি যেমন স্বর্ণ, সঞ্চয়পত্র বা ফিক্সড ডিপোজিট বন্ধক রাখা হয়। অন্যদিকে পার্সোনাল লোনে সাধারণত গ্যারান্টার বা জামিনদার দিতে হয়।

ব্যাংকের আইনি পদক্ষেপসমূহ

ঋণ খেলাপ হলে ব্যাংক প্রথমেই জামানত হিসেবে রাখা ব্ল্যাংক চেকগুলোর বিপরীতে চেক ডিজঅনার মামলা করে। এই মামলা ফৌজদারি প্রকৃতির হওয়ায় এতে জরিমানা ও কারাদণ্ড হতে পারে। এমনকি একই ব্যক্তি ও ঋণের বিরুদ্ধে একাধিক চেকের জন্য একাধিক মামলাও করে থাকে ব্যাংক, যা ঋণগ্রহীতার জন্য হয়রানিমূলক পরিস্থিতি তৈরি করে।

তবে চেক মামলায় আইনি ত্রুটি বা বিধি লঙ্ঘন থাকলে উচ্চ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ ধারা অনুযায়ী মামলার কোয়াশমেন্ট (বাতিল) চাওয়া যায়। এছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত হলে জেলা বা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করে জামিন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

অর্থঋণ আদালতে মামলা

ঋণের টাকা আদায় না হলে ব্যাংক অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ অনুযায়ী মামলা করে। এর আগে তারা দুই দফা আইনি নোটিশ ও নিলামের বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে। জামানতের সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে ঋণ আদায় সম্ভব না হলে অর্থঋণ মামলা দায়ের করা হয়।

এই আইনের আওতায় ব্যাংক শুধু ঋণগ্রহীতাকেই নয়, তৃতীয় পক্ষ বন্ধকদাতা ও গ্যারান্টারকেও বিবাদী করতে পারে। রায় হলে তা সবার উপরই যৌথভাবে প্রযোজ্য হয়। এমনকি মূল ঋণগ্রহীতার সম্পত্তি দিয়ে পাওনা সমন্বয় না হলে গ্যারান্টার বা বন্ধকদাতার সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত হতে পারে।

রায়ের পরবর্তী ব্যবস্থা

রায় একতরফা মনে হলে, ৩০ দিনের মধ্যে ১০% টাকা জমা দিয়ে মামলার পুনর্বিচারের জন্য আবেদন করা যায়। আপিল করতে হলে ৫০ লাখ টাকার বেশি ডিক্রি হলে হাইকোর্টে এবং কম হলে জেলা জজ আদালতে আপিল করতে হয়। উভয় ক্ষেত্রেই ডিক্রি টাকার ৫০% কোর্টে বা ব্যাংকে জমা দিতে হয়।

ব্যারিস্টার তাসমিয়া বলেন, ঋণগ্রহীতাদের উচিত সমস্যার শুরুতেই ব্যাংকের সাথে সমঝোতা করা, ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ রিশিডিউল করা এবং সুদ মওকুফের জন্য অনুরোধ জানানো। কারণ আইনি প্রক্রিয়া যত দীর্ঘ হয়, ঋণের সুদ ও অতিরিক্ত চার্জ ততই বাড়তে থাকে, যা শেষ পর্যন্ত দেউলিয়া করে দিতে পারে।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=9za9frI_Pgg

রাকিব

আরো পড়ুন  

×