ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গর্ভাবস্থায় দূষিত বাতাসের সংস্পর্শ বাড়ায় অকাল প্রসবের ঝুঁকি!

প্রকাশিত: ২৩:০২, ৪ জুন ২০২৫

গর্ভাবস্থায় দূষিত বাতাসের সংস্পর্শ বাড়ায় অকাল প্রসবের ঝুঁকি!

ছ‌বি: প্রতীকী

গর্ভাবস্থায় বায়ু দূষণের ক্ষুদ্র কণার সংস্পর্শে আসা মায়েদের শরীরে বিপর্যয় ঘটাতে পারে বিপাকীয় প্রক্রিয়ায়, যা গর্ভবতী মায়ের দেহের গুরুত্বপূর্ণ জৈব রাস্তার পরিবর্তন ঘটায়। সম্প্রতি এমোরি ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে নানা ধরনের নেতিবাচক প্রসবজনিত ফলাফলের সম্পর্ক রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো অকাল প্রসব।

প্রাক-পরিপক্ব প্রসব শিশুদের জন্য নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। যেমন: সেরিব্রাল পালসি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা এবং দীর্ঘমেয়াদী অসংক্রামক রোগের সম্ভাবনা। এমনকি যারা নির্ধারিত সময়ের আগেই, অর্থাৎ ৩৭ থেকে ৩৯ সপ্তাহের মধ্যে জন্মায়, তাদের মধ্যেও নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত ও মানসিক বিকাশের সমস্যা দেখা যায়।

বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ শতাংশ প্রাক-পরিপক্ব শিশুর জন্মের পেছনে মূল কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে PM2.5 (ক্ষুদ্র বায়ু দূষণ কণা)।

গবেষণার প্রধান লেখক এবং এমোরি ইউনিভার্সিটির রোলিন্স স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর পরিবেশগত স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডংহাই লিয়াং বলেন, “বায়ু দূষণ এবং অকাল প্রসবের সম্পর্ক আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এই প্রথমবার আমরা নির্দিষ্ট কণাগুলো ও তাদের প্রভাব বিশ্লেষণ করে দেখতে পেরেছি যে কীভাবে এগুলো অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়ায়।”

গবেষণায় ৩৩০ জন গর্ভবতী নারীর রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দুটি বিশেষ উপাদান – কর্টেক্সোলোন ও লাইসোPE – শনাক্ত করা হয়, যেগুলো অস্থায়ী বায়ু দূষণের প্রভাবে অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়াতে ভূমিকা রাখে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া গবেষকরা দেখতে পান, প্রোটিন হজম ও শোষণের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় দূষণের প্রভাবে। এই প্রক্রিয়া শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৩৩০ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৬৬ জন (প্রায় ২০ শতাংশ) অকাল প্রসব করেন এবং ৫৪ জন (প্রায় ১৬.৪ শতাংশ) নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তানের জন্ম দেন। এই হার যুক্তরাষ্ট্রের গড় হারের চেয়ে অনেক বেশি।

গবেষকরা বলছেন, দূষণের কারণে কোন কোন রাসায়নিক ও জৈব প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা বুঝতে পারলে ভবিষ্যতে তা লক্ষ্য করে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ বা চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবন করা সম্ভব হতে পারে।

লিয়াং বলেন, “যদি আমরা জানতে পারি ঠিক কীভাবে এই প্রক্রিয়াগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাহলে তা প্রতিরোধ করার পথ খুঁজে পাওয়াও সহজ হবে।”

সূত্র: মিড-ডে ডটকম

এম.কে.

×