
ছবি:সংগৃহীত
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল বেলা ভয়াবহ এক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো ক্রিমিয়ান সেতু। বিস্ফোরণের শক্তিতে ফুলে উঠেছিল আজব ও কৃষ্ণসাগরের জলরাশি। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি ছিল সমুদ্রপথে পরিচালিত একটি সুপরিকল্পিত ড্রোন হামলা। হামলায় ১,১০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়, যার মাধ্যমে চার লেনবিশিষ্ট সেতুটির একটি সাপোর্টিভ পিলার ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ (SBU) জানায়, এই হামলা কয়েক মাস ধরে পরিকল্পিত ছিল। অপারেশন "স্পাইডার ওয়েব" নামে পরিচিত এই অভিযানে অত্যাধুনিক সামুদ্রিক ড্রোন ব্যবহার করা হয়। সফলভাবে এই অভিযান পরিচালনার দাবি করেছে কিয়েভ।
ক্রিমিয়া রাশিয়ার জন্য একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। আজব ও কৃষ্ণসাগরের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজ চলাচল করে, যার বেশিরভাগই *ক্রিমিয়ার বন্দর* হয়ে যায়। এই কারণে সেতুটি রাশিয়ার জন্য শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং একটি সামরিক ও অর্থনৈতিক লাইফলাইন। ২০২২ ও ২০২৩ সালেও ইউক্রেন এ সেতুর উপর আঘাত হানে। ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি রাশিয়া থেকে সরাসরি ক্রিমিয়া দ্বীপকে যুক্ত করে।
রুশ নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, হামলাটি সেতুর একটি সাপোর্টিভ লেনের তলদেশে আঘাত করেছে। তবে তারা দাবি করেছে, এতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, এবং সেতুর গঠনমূলক কাঠামো অক্ষত রয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে কয়েক ঘণ্টার জন্য সেতুতে চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া, রাশিয়া দাবি করেছে কিয়েভের ষড়যন্ত্র পুরোপুরি সফল হয়নি।
ক্রিমিয়া সেতু নির্মাণে কয়েক শত বিলিয়ন ডলার খরচ করে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ব্যক্তিগত প্রকল্প হিসেবে এটি বিবেচিত হয়। এই সেতু ব্যবহার করেই ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে এবং খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের দখল নেয়। তাই এই সেতুর উপর হামলা মানে রাশিয়ার সামরিক ও রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার উপর সরাসরি আঘাত।
আঁখি