
গরমকালে কাঁচা আমের জনপ্রিয়তা যেন তুঙ্গে। তার মধ্যে ‘আমের আচার’ তো ঘরে ঘরে খাবার টেবিলের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বাদের জন্য অনেকেই প্রতিদিন খানিকটা আচার খেতে অভ্যস্ত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—এই অভ্যাস কি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা আমে যেমন রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ, তেমনি আমের আচারে আছে কিছু ভালো ও কিছু ক্ষতিকর দিক। তাই সচেতন না হলে স্বাদের এই আচার হতে পারে শরীরের জন্য বিপদের কারণ।
আমের আচারের উপকারিতা
১. স্বাদে অতুলনীয়
আচারের ঝাল-মিষ্টি স্বাদ অনেকেরই প্রিয়। হালকা খাওয়ার সঙ্গে এক চিমটি আচার বাড়িয়ে দিতে পারে খাওয়ার রুচি।
২. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণে ভরপুর
কাঁচা আমে রয়েছে ভিটামিন সি ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৩. রুচি বাড়ায়
বিশেষ করে যাঁদের খাওয়ার রুচি কম, তাঁদের জন্য আচারের স্বাদ রুচি ফিরিয়ে আনতে পারে।
সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিক
১. অতিরিক্ত লবণ ও তেল
আচার তৈরিতে ব্যবহৃত অতিরিক্ত তেল, লবণ ও মসলা উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বৃদ্ধি ও হজমের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
২. কেমিক্যালযুক্ত সংরক্ষণ
বাজারের অনেক আচারে প্রিজারভেটিভ ও রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়, যা নিয়মিত খেলে শরীরে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৩. গ্যাস্ট্রিক ও অম্বলের সমস্যা
আচারে থাকা তেল, ঝাল ও মসলা অনেকের হজমে গন্ডগোলের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, বাড়াতে পারে গ্যাস্ট্রিক বা অম্বলের সমস্যা।
৪. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সতর্কতা
অনেক আচারে চিনি বা গুড় ব্যবহৃত হয়। এসব উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে, বাড়াতে পারে রক্তে শর্করার মাত্রা।
চিকিৎসকদের পরামর্শ
-
বাড়িতে তৈরি আচার: বাড়িতে বানানো আচার অল্প পরিমাণে খাওয়া নিরাপদ, যদি কম তেল-লবণে তৈরি হয়।
-
নিয়মিত নয়, মাঝে মাঝে খান: প্রতিদিন আচার খাওয়ার অভ্যাস এড়িয়ে চলাই ভালো।
-
রোগীদের জন্য নিয়ন্ত্রণ জরুরি: উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগ বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আচারের পরিমাণ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
সতর্কতা অবলম্বন করলে আমের আচারের স্বাদ যেমন উপভোগ করা যায়, তেমনি শরীরও থাকে সুস্থ। তাই স্বাদের পাশাপাশি সচেতন থাকাটাও জরুরি।
মিমিয়া