
ছবি: সংগৃহীত
গরমের প্রকোপ বাড়ছেই, তবে রোদের চেয়ে বেশি অস্বস্তি সৃষ্টি করছে আর্দ্রতা। সামনের কয়েক সপ্তাহে এই দুই শহরে আর্দ্রতার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
প্রতিদিনই ঘর থেকে বের হয়ে একটাই কথা শুনছি—‘আজ বেশ গরম, না?’ কিন্তু আসল সমস্যা সূর্যের উত্তাপ নয়, বরং আমাদের শরীরের দুই-তৃতীয়াংশ যে উপাদানে গঠিত—জল, সেটিই এখন আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে উঠেছে।
উচ্চ তাপমাত্রা ও জলীয় বাষ্প মিলে সৃষ্টি করছে এক ভয়াবহ আবহাওয়া, যা বাড়ির ভিতর-বাইরের পরিবেশকেই করে তুলছে অস্বস্তিকর। গাড়ি থেকে অফিস বা স্কুল পর্যন্ত হাঁটা পথটাও যেন হয়ে উঠছে ঘাম ঝরানোর যন্ত্রণাময় এক অভিজ্ঞতা।
আর্দ্রতা কেন বাড়ে? সহজভাবে বললে, এর জন্য দায়ী পানি। পার্শ্ববর্তী সমুদ্রের পানি উচ্চ তাপমাত্রায় দ্রুত বাষ্পে রূপান্তরিত হয়, আর সেই বাষ্প বাতাসে মিশে তৈরি করে আর্দ্রতা। এ ছাড়া ভারতের মতো দেশগুলোতে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে উৎপন্ন বাষ্পীয় বায়ু দুবাই ও আবুধাবির দিকে প্রবাহিত হয়।
এ সময়ে আরও একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ—উষ্ণ বায়ু শীতল বায়ুর চেয়ে অনেক বেশি জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে। ফলে উষ্ণ উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আর্দ্রতা বাড়ে।
কোথায় কোথায় বেশি আর্দ্রতা হয়? আবহাওয়া অফিসের ভাষ্যমতে, উষ্ণ বায়ুতে জলীয় বাষ্প বহন করার শক্তি বেশি। উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া সাধারণত ট্রপিক্যাল অঞ্চলে দেখা যায়। অন্যদিকে, আর্কটিক বা আন্টার্কটিকার মতো শীতল অঞ্চলে জলীয় বাষ্প প্রায় থাকে না।
এছাড়া উষ্ণ মরুভূমি অঞ্চলগুলিতে পানির অভাবে আর্দ্রতা কম থাকে, যেমন সাহারা। কিন্তু উপকূল ঘেঁষা উষ্ণ অঞ্চল যেমন দুবাই ও আবুধাবিতে আর্দ্রতা বেশি হয়। এর ফলে তৈরি হয় কুয়াশা ও ধোঁয়াশা, যা ট্রাফিক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়।
কখন সবচেয়ে বেশি আর্দ্রতা হয়? বছরজুড়েই কিছু না কিছু আর্দ্রতা থাকে, তবে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। সেপ্টেম্বরকে অনেক বাসিন্দা মজা করে বলেন 'Sweat-tember', কারণ প্রতিনিয়ত ঘাম ঝরাতে হয়।
আর্দ্রতা গরম অনুভূতিকে বাড়ায় কেন? যখন আর্দ্রতা কম থাকে, তখন শরীর ঘাম ঝরিয়ে তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবে আর্দ্রতা বেশি থাকলে বাতাসে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প থাকায় ঘাম বাষ্প হতে পারে না, ফলে শরীর ঠাণ্ডা হওয়ার সুযোগ পায় না। এতে শরীর ওভারহিট হয়ে বিপদজনক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
কীভাবে নিরাপদ থাকবেন? উচ্চ আর্দ্রতায় শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করা, রোদ থেকে দূরে থাকা এবং দীর্ঘ সময় বাইরে না থাকা জরুরি। এ সময়ে এয়ার কন্ডিশনারই সবচেয়ে বড় বন্ধু। এছাড়া বাড়িতে ছত্রাক বা ফাঙ্গাসের জন্ম হতে পারে, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
শহীদ