
ছবি: সংগৃহীত
২০১১ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসকে জিজ্ঞেস করেছিলেন—“কী করলে আইফোন আমেরিকায় তৈরি হবে?”
চৌদ্দ বছর পর, সেই একই প্রশ্ন আবার উঠে এসেছে—তবে এবার আরও জোরালোভাবে, আরও উচ্চস্বরে। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাপল সিইও টিম কুককে জানিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকায় বিক্রি হওয়া প্রতিটি আইফোন যেন আমেরিকাতেই তৈরি হয়। তা না হলে, অন্তত ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে অ্যাপলকে।
ট্রুথ সোশাল প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প লিখেছেন, “আমি অনেক আগেই টিম কুককে জানিয়েছি, যেসব আইফোন আমেরিকায় বিক্রি হবে, সেগুলো যেন আমেরিকাতেই তৈরি হয়—না যে ভারতে, না অন্য কোথাও। তা না হলে, অ্যাপলকে ২৫% বা তার বেশি ট্যারিফ দিতে হবে।”
অ্যাপল সিইও টিম কুক অবশ্য কিছুদিন আগেই বলেছেন, এখন থেকে বেশিরভাগ মার্কিন বাজারের আইফোনই ভারতে তৈরি হবে। এই ঘোষণার ঠিক পরেই ট্রাম্পের হুমকি নতুন করে আলোচনায় আসে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো—অ্যাপল কি আদৌ আমেরিকায় আইফোন তৈরি করতে পারবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইফোন তৈরির জটিল ও সুচারু প্রক্রিয়া আমেরিকায় হুট করে স্থানান্তর করা প্রায় অসম্ভব। চীন এবং ভারতে যে দক্ষ জনশক্তি, কারখানাগুলোর সক্ষমতা, এবং দক্ষতা গড়ে উঠেছে, তা আমেরিকায় নেই। চীনে অ্যাপলের পার্টনার ফক্সকন একাই মৌসুমভিত্তিক ৯ লাখ কর্মী নিয়োগ দেয়। তারা কারখানার পাশে ডরমিটরি বানিয়ে শ্রমিকদের রাখে, যাতে অল্প নোটিশে উৎপাদন বাড়ানো বা কমানো যায়।
ফরেস্টার রিসার্চের ভাইস প্রেসিডেন্ট দীপাঞ্জন চ্যাটার্জি বলেন, “এটা অর্থনৈতিকভাবে বাস্তব নয়। চীন যেভাবে শত শত উপাদান ও দক্ষ শ্রমিককে একত্র করে বিশাল পরিসরে উৎপাদন চালায়, আমেরিকায় তার ধারে-কাছেও কিছু নেই।”
দক্ষতার ঘাটতি ও খরচের চাপ
আধুনিক উৎপাদন কেবল কারখানার কাজ নয়, বরং কোডিং, রোবোটিক্স এবং ডেটা অ্যানালাইটিক্সের মতো প্রযুক্তিভিত্তিক কাজ। মার্কিন শ্রমবাজারে এই দক্ষতা খুব সীমিত, আর যেটুকু আছে, তা মূলত উচ্চ বেতনের চাকরিতে ব্যবহৃত হয়।
তাছাড়া, চীনের পাশাপাশি ভারতের কারখানাগুলোতেও এখন অ্যাপল বহু আইফোন তৈরি করছে। বিশ্লেষক ড্যান আইভস জানান, আগে যেখানে ৯০% আইফোন চীনে তৈরি হতো, এখন তা কমে ৪০%-এ নেমেছে, কারণ অ্যাপল ধীরে ধীরে ভারতে উৎপাদন বাড়াচ্ছে।
ফরিদ