ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলা নিয়ে যা জানা গেল

প্রকাশিত: ০৮:৫৩, ৩০ মে ২০২৫

জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলা নিয়ে যা জানা গেল

ছবি:সংগৃহীত

রংপুরে ফের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা) এবং এনসিপি-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্য দিয়ে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় এই উত্তেজনা গড়ায় সংঘর্ষে। এতে জাপার নেতাকর্মীদের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, ভাঙচুর করা হয় জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সেনপাড়ার পৈত্রিক বাড়ির জানালা ও দরজা।

 

 

সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে জি এম কাদেরের রংপুর সফরকে কেন্দ্র করে। তিনি বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তোলেন। এর পরপরই তাকে গ্রেফতারের দাবিতে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মিছিল বের করে। এই মিছিল সেনপাড়ার স্কাইভিউয়ের দিকে গেলে, সেখানে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাঙচুর হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ এবং সেনা সদস্য।

ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করেছে দুই পক্ষই। জাপার দাবি, তারা আলোচনারত অবস্থায় হামলার শিকার হয় এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হয়। জাপার পক্ষ থেকে এই হামলার জন্য এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং একটি বড় রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দায়ী করা হয়। জাপা নেতারা জানান, তারা এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং দলীয়ভাবে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

 

 

অন্যদিকে, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেওয়ার সময় জাপার কর্মীরাই প্রথম ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা চালায়। তারা দাবি করে, জাতীয় পার্টির নেতাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল এবং তাদের চারজন আহত হয়েছেন। জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান নেতারা। তারা আরও অভিযোগ করেন, জাপার নেতাকর্মীরাই পরিকল্পিতভাবে নিজের বাসায় হামলা চালিয়ে ঘটনা অন্যদিকে নিতে চায়।

ঘটনাস্থলে ছুটে যান জাপার কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসিরসহ শীর্ষ নেতারা। তারা দাবি করেন, এই হামলা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং জাপার নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে দলীয়ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।

রাত গভীর হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয় এবং পুলিশ জানায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেনাবাহিনীও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ছিল।

 

 

প্রসঙ্গত, জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বেশ কিছুদিন ধরেই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলছে। সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেফতারের দাবিও উঠে এসেছে। এই রাজনৈতিক বিরোধ এখন রংপুরের রাজনীতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আঁখি

×