ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অতিরিক্ত ঔষধ থেকে অনিয়মিত জীবনযাপন, যেসব অভ্যাসে নষ্ট হচ্ছে কিডনি!

প্রকাশিত: ০২:৩২, ২৯ মে ২০২৫; আপডেট: ০২:৩৪, ২৯ মে ২০২৫

অতিরিক্ত ঔষধ থেকে অনিয়মিত জীবনযাপন, যেসব অভ্যাসে নষ্ট হচ্ছে কিডনি!

কিডনি আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীরের বর্জ্য পদার্থ ছেঁকে বের করে দিতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে প্রতিদিনকার কিছু সাধারণ অভ্যাস কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। নিচে তেমনই দশটি অভ্যাস তুলে ধরা হলো, যেগুলো এড়িয়ে চললে কিডনি দীর্ঘদিন সুস্থ রাখা সম্ভব।

১. অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবন 
নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস (NSAIDs) ও অন্যান্য ব্যথানাশক ওষুধ সাময়িকভাবে ব্যথা উপশম করলেও দীর্ঘমেয়াদে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে যাদের কিডনি সমস্যা আগে থেকেই আছে, তাদের জন্য এসব ওষুধ খুবই ক্ষতিকর। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত এসব ওষুধ সেবন করা উচিত নয়।

২. অতিরিক্ত লবণ খাওয়া
খাবারে অতিরিক্ত লবণ ব্যবহারে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায়, যা কিডনির জন্য খুবই ক্ষতিকর। লবণের পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের হার্বস ও মশলা ব্যবহার করতে পারেন খাবারে। কিছুদিন পর আপনার জিভ নিজেই এই স্বাদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে।

৩. প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া
২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত প্রক্রিয়াজাত খাবার খান, তাদের কিডনি রোগের ঝুঁকি ২৪ শতাংশ বেশি। এসব খাবারে সোডিয়াম, চিনি, ট্রান্স ফ্যাট, এবং বিভিন্ন কেমিক্যাল থাকে যা কিডনির জন্য মারাত্মক। ফলমূল, শাকসবজি এবং পূর্ণ শস্য জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

৪. কম পানি পান করা
শরীরে পানির অভাবে কিডনি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। পর্যাপ্ত পানি কিডনিকে বর্জ্য পদার্থ ছেঁকে ফেলতে সাহায্য করে এবং কিডনির পাথর বা ইউরিনারি ইনফেকশনের ঝুঁকি কমায়। তবে কারও যদি শেষ পর্যায়ের কিডনি সমস্যা থাকে, তাদের পানি পান করার পরিমাণ নির্ধারণ করে নিতে হয় চিকিৎসকের পরামর্শে।

৫. ঘুমের অভাব
কিডনির স্বাভাবিক কাজ পরিচালনায় ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের সময় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায় এবং নিজস্ব কার্যক্রম ঠিকভাবে সম্পন্ন করে। অনিয়মিত ঘুমের ফলে কিডনির কার্যক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে।

৬. শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা
নিয়মিত ব্যায়াম কিডনি স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি ওজন, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা কিডনি রোগ নিয়েও নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাঁদের মৃত্যুঝুঁকি অনেক কম।


দিনশেষে, কিডনির যত্ন নেওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। পরিমিত খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা, এবং পর্যাপ্ত পানি পান—এই অভ্যাসগুলো রক্ষা করলেই কিডনি সুস্থ থাকবে বহুদিন।

রিফাত

×