ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নতুন নিয়মে

জমির দলিল, দখল, রেকর্ড ও নামজারি থাকলেও মালিকানা টিকবে না যে কারণে

প্রকাশিত: ১৯:০০, ২৯ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:১৯, ২৯ মে ২০২৫

জমির দলিল, দখল, রেকর্ড ও নামজারি থাকলেও মালিকানা টিকবে না যে কারণে

ছবিঃ সংগৃহীত

আপনার কাছে জমির বৈধ দলিল আছে, আপনি জমিটি দখলে রেখেছেন, হালনাগাদ রেকর্ড ও খতিয়ান আপনার নামে, এমনকি নামজারিও সম্পন্ন। তবু আইন বলছে—এসব কাগজপত্র থাকার পরও আপনি হতে পারেন না জমির প্রকৃত মালিক। তাহলে জমির আসল মালিক কে? এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে বর্তমান প্রচলিত আইন ও নতুন ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’-এর আলোকে।

প্রচলিত তামাদি আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি ১২ বছরের বেশি সময় ধরে কারও জমি ভোগদখলে রাখেন এবং এসময় প্রকৃত মালিক আইনি ব্যবস্থা না নেন, তাহলে সেই ব্যক্তি আদালতের রায় ছাড়া মালিক হতে পারবেন না। মালিকানা পেতে হলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে একটি ডিক্রি বা রায় আদায় করতে হবে।

অন্যদিকে, ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’-এর ৭ ধারায় চার শ্রেণির দখলদারকে উচ্ছেদ না করার বিধান দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
১. যার নামে সর্বশেষ রেকর্ড রয়েছে,
২. যার ওয়ারিশেরা বর্তমানে ভোগদখলে আছে,
৩. যার কাছে দলিল আছে (যদি তা ধারাবাহিক মালিকানার ভিত্তিতে হয়),
৪. যার নামে আদালতের রায় বা ডিক্রি রয়েছে।

তবে আইন এটিও বলছে—যদি এসবের পেছনে মালিকানার ধারাবাহিকতা না থাকে (যেমন সিএস, এসএ, আরএস খতিয়ান মূলে দলিল না হয়), তাহলে সেই দলিল, রেকর্ড বা নামজারির ভিত্তিতে মালিকানা টিকবে না।

জমির প্রকৃত মালিকানা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মালিকানার ধারাবাহিকতা বা চেইন অব টাইটেল। একজন প্রকৃত মালিকের নামে সিএস, এসএ ও আরএস খতিয়ানে মালিকানা থাকতে হবে এবং পরবর্তী দলিলগুলোকে সেই খতিয়ানসমূহের ভিত্তিতে হতে হবে।

যেসব ব্যক্তি বা পরিবার পূর্বপুরুষের নামে বৈধ খতিয়ান ও দলিল থাকা সত্ত্বেও জমির দখল হারিয়েছেন, তারা এখনো আদালতে গিয়ে মালিকানা ফিরে পেতে পারেন। দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে উপযুক্ত প্রমাণ ও কাগজপত্র পেশ করলে জমির প্রকৃত মালিকানা পুনরুদ্ধার সম্ভব।

যাদের কাছে কেবল একটি বিএস খতিয়ান, রেকর্ড বা নামজারি আছে এবং কোনো পূর্ব খতিয়ান বা মালিকানার ইতিহাস নেই, তারা শুধুমাত্র এসব কাগজ দেখিয়ে মালিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না। জমির প্রকৃত মালিকানা দাবি করতে হলে মালিকানার ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা প্রমাণ করতে হবে।

তাই যেকোনো জমি সংক্রান্ত জটিলতায় আইনের শরনাপন্ন হওয়াই শ্রেয়। একজন অভিজ্ঞ সিভিল লয়ারের পরামর্শ নিয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা করাই হচ্ছে সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের সঠিক পথ।

সূত্রঃ https://youtu.be/S8pyPFLb2h4?si=ZwEa5oteIO5HZ-Rd

ইমরান

×