চর বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও সংলাপ 

চর বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ধরলা পাড়ের বিভিন্ন চর-দ্বীপচরে মানববন্ধন ও চরবাসীদের নিয়ে একের পর এক সংলাপ করে যাচ্ছে জেলা চর উন্নয়ন কমিটি। বিপুল সাড়া পাচ্ছে চরবাসীদের। সাম্প্রতিক সময়ে ধরলা নদীর পারে গোড়কমণ্ডল গ্রামে, দুধকুমার নদীর পারে কাজিয়ারচর গ্রামে, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ঘুঘুমারীর চর গ্রামে, তিস্তা নদীর পারে বুড়িরহাট গ্রামে এবং চিলমারী উপজেলার চর কড়াই বরিশাল গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের এ কর্মসূচি পালন করে। এতে চরের শত শত নারী পুরুষ অংশ নেয়।

পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতো নদী ভাঙনরোধ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ সকল নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিজেদের জীবনমান উন্নয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান চরবাসীরা।
এতে অংশ নেয় চর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবিতে গঠন করা চর উন্নয়ন জেলা কমিটির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বেবু, সদস্য সচিব আশরাফুর হক রুবেল, সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল কবির সুমন, অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলুসহ অন্যান্যরা।
সংলাপে বন্যা, খরা, নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত জীবনের কথা তুলে ধরেন চরবাসীরা।এ সময় চরবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে চর মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে সকলকে এক সঙ্গে কাজ করার কথা জানান চর উন্নয়ন কমিটির নেতারা।
কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকায় সাড়ে ৪ শতাধিক চরাঞ্চলে বসবাস করছে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষাধিক মানুষ।
চর কড়াই বরিশাল গ্রামের আবদুল হাকিম ও আহাদ আলী জানান, স্বাধীনতার ৫৩ বছর থেকে আমরা চরের মানুষ বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছি। মেইনল্যান্ডের মানুষ যে সুবিধা পায় আমরা চরের মানুষরা তা সুবিধা পাই না। আমরা চরের মধ্যে কৃষিপণ্য আবাদ করি, তা শহরে নিয়ে যেতে পারি না।

একই গ্রামের সেতারা বেগম জানান, আমাদের দাবি আমরা চরের একটি মন্ত্রণালয় চাই। চরের নারীরা অবহেলিত। চরে যখন একজন গর্ভবতী মা তার সন্তান প্রসব করতে যায়, সে প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করে। তখন ঐ অবস্থায় তাকে ৬ কিঃমিঃ নদীপথে দিয়ে গিয়ে উপজেলা শহরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা দেওয়া হয়।

অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু ও পিপি অ্যাডভোকেট বজলুর রশীদ জানান, চরের সকল মানুষের উন্নয়নের জন্য সমস্যা ভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্দেশ্যে আর একটি চর মন্ত্রণালয় করা জরুরি।

জেলা চর উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বেবু জানান, বাংলাদেশে ৬৪টি জেলার মধ্যে আমাদের কুড়িগ্রাম জেলা হচ্ছে সবচেয়ে গরিব জেলা। এখানে ২৪ লাখ লোক বাস করে। এর মধ্যে ১৮ লাখ মানুষ দরিদ্র। হতদরিদ্র ১৪ লাখ মানুষ। তাই এখানে চর মন্ত্রণালয় করা জরুরি।