ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ধস ও বন্যার শঙ্কা, বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা

হাছানুল করিম, খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ১ জুন ২০২৫

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ধস ও বন্যার শঙ্কা, বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে দেখা দিয়েছে পাহাড় ধস ও আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি চেঙ্গী, ফেনী ও মাইনী নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রোববার ভোরে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার ধুমনীঘাট এলাকায় একটি বড় পাহাড় ধসে পড়ে। এতে মহালছড়ি ও জালিয়াপাড়ার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একইভাবে সদর উপজেলার কমলছড়ি ইউনিয়নের রাজশাহী টিলা ও ভুয়াছড়ি সংযোগ সড়ক এবং শালবন ও কুমিল্লা টিলা এলাকায় একাধিক স্থানে ছোট আকারের পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। যদিও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি, তবে বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন ও সড়ক চলাচল।

টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে চেঙ্গী, ফেনী ও মাইনী নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বেড়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোর মধ্যে দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা ও মহালছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে ইতোমধ্যে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। বিশেষ করে চেঙ্গী নদীর প্রবল স্রোতে বসতবাড়ি ও কৃষিজমি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকট আকার ধারণ করেছে।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, “পাহাড় ধস ও সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে ধসে পড়া সড়ক পরিষ্কারে কাজ করছে। পাশাপাশি বিকল্প যাতায়াত ব্যবস্থা তৈরির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।”

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায় জানান, "পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী এবং নদী তীরবর্তী এলাকাবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম চলছে। রোববার সকাল থেকেই শালবন, কুমিল্লা টিলা ও গোলাবাড়ি এলাকা থেকে দুই শতাধিক পরিবারকে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। সহায়তায় রয়েছে রেড ক্রিসেন্ট, স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকগণ।"

জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিস্থিতি সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

পাহাড়ি অঞ্চলজুড়ে এমন দুর্যোগ পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মিরাজ খান

×