ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মহাকাশে নাটকীয়তা: জেগে উঠেছে বিশাল এক মহাজাগতিক দৈত্য!

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৩:৪২, ৩ জুন ২০২৫

মহাকাশে নাটকীয়তা: জেগে উঠেছে বিশাল এক মহাজাগতিক দৈত্য!

ছবি: প্রতীকী

মহাকাশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর—সাধারণত নিস্তব্ধ এবং ভয়ংকর। কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এক বিরল মহাজাগতিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন—একটি সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল ঘুম ভেঙে হঠাৎ জেগে উঠেছে, এবং চারপাশে বিকিরণ ছড়াতে শুরু করেছে!

জার্মান গবেষক পাউলা সানচেজ সায়েজ বলেন, ‘যে গ্যালাক্সি এতদিন নিস্তব্ধ ছিল, তা হঠাৎ করে আলোকিত হতে শুরু করে। এটি একেবারে নাটকীয় এবং অভূতপূর্ব। আগে কখনোই আমরা কোনো ব্ল্যাকহোলকে নিস্তব্ধতা থেকে সক্রিয়তায় রূপান্তর হতে এভাবে সরাসরি দেখিনি।’

গ্যালাক্সির নাম: SDSS1335+0728

ঘটনাটি ঘটেছে ভারগো তারকামণ্ডলে অবস্থিত এই গ্যালাক্সিতে, যা পৃথিবী থেকে প্রায় ৩০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। বিজ্ঞানীরা জানান, ২০১৯ সালের শেষ দিক থেকে এই গ্যালাক্সির উজ্জ্বলতা হঠাৎ বেড়ে যেতে থাকে। পরে দেখা যায়, এর কেন্দ্রের ব্ল্যাকহোলটি রীতিমতো আলো ছড়ানো শুরু করেছে।

এই ব্ল্যাকহোলটি সূর্যের ভরের ১০ লাখ গুণ বড়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেখানে এক্স-রে বিকিরণও শুরু হয়, যা সাধারণত ব্ল্যাকহোলের প্রবল সক্রিয়তার ইঙ্গিত দেয়।

কী ঘটেছে আসলে?

বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ব্ল্যাকহোলটির চারপাশে থাকা বিপুল পরিমাণ গ্যাস ও পদার্থ এর মধ্যে পড়তে শুরু করে। এর ফলে বিশাল এই কৃষ্ণগহ্বর এখন ‘অ্যাকটিভ গ্যালাকটিক নিউক্লিয়াস’ বা সক্রিয় গ্যালাকটিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।

এটি প্রথমবারের মতো এমন একটি ব্ল্যাকহোলকে রিয়েল টাইমে জেগে উঠতে দেখা গেছে। ফলে বিজ্ঞানীরা এখন ব্ল্যাকহোল কীভাবে সক্রিয় হয়, কীভাবে তা গ্যালাক্সির কেন্দ্রকে প্রভাবিত করে—এসব বিষয়ে নতুন করে বুঝতে পারছেন।

বিজ্ঞানী ক্লাউডিও রিকি বলেন, ‘এই ঘটনা আমাদের জানায়, সুপ্ত কৃষ্ণগহ্বররাও হঠাৎ জেগে উঠতে পারে। এটি মহাবিশ্বের গঠন ও গ্যালাক্সির বিবর্তন বোঝার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র।’

এই আবিষ্কার শুধু একটি মহাজাগতিক বিস্ময় নয়, বরং এটি মহাবিশ্বের গভীরে লুকিয়ে থাকা শক্তির প্রকৃতি বোঝার নতুন দিক উন্মোচন করেছে।

 

সূত্র: এনডিটিভি।

রাকিব

×