
ছবি: সংগৃহীত।
সূর্যের পৃষ্ঠে বিশালাকৃতির একটি "মুখের মতো" গর্ত তৈরি হয়েছে, যা দেখতে যেন সূর্য নিজেই অবাক হয়ে গেছে! এই গর্তটির প্রস্থ প্রায় পাঁচটি বৃহস্পতিগ্রহের সমান এবং এটি পৃথিবীর দিকে প্রবল সূর্যীয় কণাস্রোত পাঠাচ্ছে।
তবে বাস্তবে এটি কোনও গর্ত নয়, বরং একে বলা হয় "করোনাল হোল" বা সৌর পৃষ্ঠে একটি বিশেষ ধরনের ফাঁক। এই অঞ্চলগুলোতে সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্র খোলা থাকে, যার ফলে সূর্য থেকে সবসময় নির্গত হওয়া কণাস্রোত (solar wind) আরও সহজে ছড়িয়ে পড়ে সৌরজগতে।
দেখতে এটি একটি চমকপ্রদ দৃশ্য। অপটিক্যাল তরঙ্গদৈর্ঘ্যে সূর্য দেখলে এই গর্তগুলো চোখে পড়ে না, তবে অতিবেগুনি (UV) আলোকচিত্রে এগুলো বিশাল অন্ধকার ফাঁকা অঞ্চল হিসেবে দৃশ্যমান হয়।
বর্তমানে সূর্যের দক্ষিণ গোলার্ধে বিস্তৃত একটি মুখের মতো গর্ত এবং উত্তরাংশে দুটি বৃহৎ 'চোখ'-এর মতো কালো ছোপ দেখা যাচ্ছে—যা মিলিয়ে মনে হচ্ছে সূর্যের একটি ভীতিকর চেহারা ফুটে উঠেছে। এই 'চোখ' দুটো প্রত্যেকটি আবার বৃহস্পতির আকৃতির সমান।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই দৃশ্য দেখে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। করোনাল হোল একটি স্বাভাবিক সৌর ঘটনা। এর মাধ্যমে বেরিয়ে আসা কণাস্রোত (solar wind) যদি পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তাহলে হালকা মাত্রার জিওম্যাগনেটিক ঝড় সৃষ্টি হতে পারে। তবে এটি বড় ধরনের সৌর উৎক্ষিপ্ত বস্তুর (coronal mass ejection) মতো তীব্র নয়।
ব্রিটেনের আবহাওয়া অধিদপ্তর (Met Office) জানিয়েছে, “দক্ষিণাংশে থাকা করোনাল হোল থেকে কিছুটা বর্ধিত কণাস্রোত আসতে পারে, তবে এর সম্ভাবনা কম এবং এটি দুর্বল প্রভাব ফেলবে বলেই মনে হচ্ছে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, সাম্প্রতিক সময়ে সূর্য অনেক বেশি সক্রিয়। সম্প্রতি একটি G4 মাত্রার শক্তিশালী জিওম্যাগনেটিক ঝড় পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেয়, যার ফলে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর আকাশে বিরল রঙিন অরোরার ঝলক দেখা গেছে অনেক নিচু অক্ষাংশেও।
সূর্য বর্তমানে তার ১১-বছরের চক্রের সবচেয়ে সক্রিয় পর্যায় থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে। এর ফলে আরও বিস্ময়কর সৌর ঘটনার সাক্ষী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, পরবর্তীবার সূর্য হয়তো একটু কম চিন্তিত মুখে ধরা দেবে!
সূত্র: https://urli.info/-yHX
মিরাজ খান