
ছবি: সংগৃহীত
ইতালির বিখ্যাত আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনায় ভয়াবহ অগ্নুৎপাতের ঘটনায় সোমবার (২ জুন) আতঙ্কে দৌড়ে পালিয়েছেন শত শত পর্যটক। আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণে কয়েক কিলোমিটার উঁচুতে গ্যাস, ছাই ও পাথরের ধোঁয়ায় মুহূর্তেই বদলে যায় পরিবেশ—এমনটাই জানাচ্ছে ইতালির ভূকম্পবিদ্যা ইনস্টিটিউট।
ঘটনার সময় পাহাড়ে ঘুরতে থাকা পর্যটকদের অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করেছেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পর্যটক দলের গাইড জিউসেপে পানফালো আতঙ্কিত পর্যটকদের একত্রিত করে নিচে নামাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মাত্র দু’ধাপ দূরে ছিলাম। ধোঁয়ার পরিমাণ ছিল বিশাল, আর শব্দ ছিল ভয়ঙ্কর গর্জনের মতো।’
সিসিলির সিভিল প্রোটেকশন এজেন্সির প্রধান সালভো কচিনা জানিয়েছেন, আগ্নেয়গিরির আশপাশে থাকা সব পর্যটক ও গাইডদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রায় এক ডজন ট্যুর কোম্পানি সেখানে নিয়মিত কাজ করে, সবাইকে খোঁজ নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটি ২০১৪ সালের পর এটনায় সবচেয়ে বড় অগ্নুৎপাত। আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ-পূর্ব দিকের একটি অংশ আংশিক ধসে পড়ে, যেখান থেকে আগেও কয়েকবার লাভা উদগীরণ হয়েছিল।
স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে এটি লাভা উদগীরণ শুরু করে, যা আগের কয়েকটি অগ্নুৎপাতের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। সিসিলির প্রেসিডেন্ট রেনাতো শিফানি জানিয়েছেন, ‘বর্তমানে জনসাধারণের জন্য কোনো তাৎক্ষণিক ঝুঁকি নেই। তবে আগ্নেয়গিরির আশপাশের এলাকায় প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে।’
৩৩ বছর বয়সী হাইকিং গাইড আলেসিও জোকো বলেন, ‘এটি ছিল হঠাৎ বিস্ফোরণের মতো—একটা বড় আওয়াজে শুরু হলো। তবে ভালো দিক হলো, খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। এটনা একটি দুর্ধর্ষ প্রাকৃতিক শক্তি, যার সামনে মানুষকে বিনয় ও প্রস্তুতি নিয়ে দাঁড়াতে হয়।’
বর্তমানে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ভূকম্পবিদ্যার জাতীয় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। তারা জানায়, এই বিস্ফোরণ ছিল একটি ‘পাইরোক্লাস্টিক ইরাপশন’—যার ফলে ধ্বংসাত্মক গরম গ্যাস, লাভা, ছাই এবং বড় বড় পাথরের টুকরো পাহাড়ের ঢাল বেয়ে দ্রুত নেমে আসে।
সাধারণ পর্যটকদের জন্য এখনই এটনার চূড়ায় যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন অগ্নুৎপাত হঠাৎ শুরু হলেও অনেক সময় হঠাৎ থেমেও যায়। তবে পাহাড়ে যাওয়ার আগে এখন সতর্কতাই একমাত্র উপায়।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/o-Y_xoISXBE
সূত্র: সিএনএন।