ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘ও আমার স্ত্রীকেও ছাড়েনি’ সেনাপ্রধানকে উদ্দেশ্য করে ইমরান খান

প্রকাশিত: ১৭:৪৯, ৪ জুন ২০২৫

‘ও আমার স্ত্রীকেও ছাড়েনি’ সেনাপ্রধানকে উদ্দেশ্য করে ইমরান খান

ছবি:সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খান সম্প্রতি ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছেন। কারাবন্দি অবস্থায় মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, আসিম মুনির তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির* প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করেছেন।

 

 

ইমরান খানের দাবি, তিনি যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন আসিম মুনিরকে আইএসআই প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেন। এর প্রতিক্রিয়ায় মুনির তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, যা ছিল একপ্রকার চাপ প্রয়োগ ও রাজনৈতিক কৌশল। তবে বুশরা বিবি তা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেন এবং জানান, তিনি কোনো রাজনৈতিক আলোচনায় যুক্ত নন।

ইমরানের ভাষায়,
"বুশরা বিবি ১৪ মাস ধরে অন্যায্যভাবে কারাবন্দি। কারাগারে তাঁর সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে, তার পেছনে রয়েছে আসিম মুনিরের প্রতিহিংসামূলক মনোভাব।"

 

 

 

বর্তমানে পাকিস্তানের ‘ডি ফ্যাক্টো’ শাসক হিসেবে বিবেচিত আসিম মুনিরের হাতে রয়েছে কার্যত সমস্ত ক্ষমতা। সেনাবাহিনীর গোপন সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে রাজনীতির দিকনির্দেশ—সবই নির্ধারিত হয় তাঁর ছায়ায়। সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুর-এর সফল বাস্তবায়নের পর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করেন।

 

 

ইমরান খান তাঁর পোস্টে কেবল আসিম মুনির নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধেও কড়া ভাষায় অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন,
"পরিকল্পিতভাবে আমাকে ও আমার দলের নেতাকর্মীদের কারাবন্দি করা হয়েছে। জনগণের রায়ে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দুর্নীতিবাজ শরিফ ও জারদারিদের ক্ষমতায় বসানো হয়েছে।"

 

 

২০২৩ সাল থেকে রাওয়ালপিন্ডি কারাগারে বন্দি রয়েছেন ইমরান খান। তাঁর দাবি, সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে পিটিআই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালাচ্ছে। এমনকি তাঁর দলের কর্মসূচিকে ঘিরে সেনা ঘাঁটিতে হামলার অভিযোগ এনে মিথ্যা মামলা দিয়ে বহু নেতাকর্মীকে জেলে পাঠানো হয়েছে।

 

ইমরান খানের এই বিস্ফোরক অভিযোগ পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিহিংসার অভিযোগ এবং বিচারব্যবস্থা নিয়ে খোলামেলা ক্ষোভ প্রকাশ এই অঞ্চলের রাজনৈতিক ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ করছে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন শুধু সময়ই বলবে।

আঁখি

×