ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এপস্টেইন ফাইলস বিতর্ক: ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা

প্রকাশিত: ০৭:৩২, ৬ জুন ২০২৫

এপস্টেইন ফাইলস বিতর্ক: ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা

ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে যৌন পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত জেফরি এপস্টেইনের মামলার অবশিষ্ট তদন্ত নথি — যেগুলোকে “এপস্টেইন ফাইলস” নামে ডাকা হয় — তা প্রকাশের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছে ডানপন্থি অনলাইন ব্যক্তিত্ব ও কনস্পিরেসি থিওরিস্টরা। এই দাবির মাঝেই ইলন মাস্ক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে এক অনলাইন দ্বন্দ্ব নতুন করে আলোচনায় এনেছে এই গোপন নথিগুলোকে।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, "এখন সময় হয়েছে বড় বিস্ফোরণের। ট্রাম্প ‘এপস্টেইন ফাইলসে’ আছেন। এ কারণেই এসব প্রকাশ করা হয়নি।” যদিও মাস্ক এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেননি, তবু তিনি যোগ করেন, “সত্য সামনে আসবে।”

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়েছে। যদিও তদন্ত নথিতে কারো নাম থাকলেই তা কোনো অপরাধ প্রমাণ করে না। কারণ এসব নথিতে ভুক্তভোগী, সাক্ষী কিংবা কোনোভাবে সংশ্লিষ্ট নির্দোষ ব্যক্তিদের নাম থাকতেই পারে।

জেফরি এপস্টেইন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প অতীতে একে অপরের সঙ্গে বহুবার সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা করেছেন। ২০০২ সালে নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি তাকে ১৫ বছর ধরে চিনি। সে খুব মজার একজন লোক।”

ওই সাক্ষাৎকারেই ট্রাম্প বলেন, “শোনা যায়, তারও সুন্দরী নারীদের প্রতি আগ্রহ আমার মতোই, যদিও তাদের অনেকেই কমবয়সি।”

তবে ২০১৯ সালে এপস্টেইনের গ্রেফতারের পর ট্রাম্প নিজেকে তার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেন। “পাম বিচের সবাই যেমন চিনত, আমিও তেমনি চিনতাম। বহু বছর ধরে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না,” বলেন ট্রাম্প।

এপস্টেইনের মামলার কেন্দ্রে থাকা অনেক তথ্য, বিচার ও মৃত্যু ঘিরে বহু বছর ধরে জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে — বিশেষ করে ক্ষমতাবানদের ভূমিকা নিয়ে। ২০০৮ সালে প্রথম দণ্ডপ্রাপ্ত হলেও, একটি আলোচিত চুক্তির মাধ্যমে তিনি স্বল্প শাস্তি ভোগ করেন।

২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার গ্রেফতারের পর জেলখানায় আত্মহত্যা করেন এপস্টেইন। কিন্তু তার মৃত্যু এবং মামলার হ্যান্ডলিং ঘিরে নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও গুজব জন্ম নেয়। এর ফলে মামলার সম্পূর্ণ নথি প্রকাশের দাবি আরও জোরালো হয়।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি “ফেজ-১” নামে প্রথম ধাপের কিছু নথি প্রকাশ করেন, যদিও সেগুলোর বেশিরভাগ আগেই প্রকাশিত ছিল বলে সমালোচনা ওঠে।

সূত্র জানায়, পরবর্তী ধাপের নথি প্রকাশে ফেডারেল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ফাইলগুলোর মধ্যকার নিরীহ মানুষের নাম গোপন রাখা এবং তথ্য যাচাই নিয়ে দ্বিধার মধ্যে আছে।

তবে অনলাইন ইনফ্লুয়েন্সার ও ডানপন্থি কর্মীদের চাপের মুখে এফবিআই ও বিচার মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে এপস্টেইনের কথিত "ক্লায়েন্ট লিস্ট" নিয়েই আগ্রহ তুঙ্গে — যদিও বাস্তব মামলার বিবরণে এমন তালিকার অস্তিত্ব স্পষ্ট নয়।

সূত্রঃ দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

নোভা

আরো পড়ুন  

×