
ছবি: সংগৃহীত।
ঈদুল আজহার সময় গরু, খাসি বা অন্য কোরবানির পশুর মাংস এবং অতিরিক্ত মাছ ঘরে সংরক্ষণের বিষয়টি অনেকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যখন ফ্রিজে জায়গা কম কিংবা বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দেয়, তখন সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতি জানা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এসময় কিছু নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।
কোরবানির মাংস সংরক্ষণের আগে যা করবেন।
রক্ত ঝরিয়ে নিন:
কোরবানির পরপরই মাংসের রক্ত ভালোভাবে ঝরিয়ে নিতে হবে। রক্ত থেকে সহজে জীবাণু তৈরি হয়।
ছায়ায় ঠান্ডা করা:
মাংস কাটা ও পরিস্কারের পর সরাসরি ফ্রিজে না দিয়ে অন্তত ৪-৫ ঘণ্টা ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে ঠান্ডা হতে দিন। গরম অবস্থায় ফ্রিজে দিলে মাংসে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
পরিমাণমতো ভাগ করুন:
মাংস ছোট ছোট প্যাকেটে ভাগ করে সংরক্ষণ করলে প্রতিবার সহজে বের করে রান্না করা যায়, ফ্রিজ খোলা-বন্ধ কম হয়।
বায়ুরোধী ব্যাগ ব্যবহার করুন:
প্লাস্টিক ফুড গ্রেড ব্যাগ বা জিপ-লক ব্যাগ ব্যবহার করে ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে ফ্রিজের গন্ধও ছড়ায় না এবং বরফ জমে না।
মাছ সংরক্ষণের নিয়ম
মাছ পরিষ্কার করে নিন:
মাছের আঁশ, নাড়িভুঁড়ি ভালোভাবে ফেলে দিন এবং পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে রাখুন।
লবণ দিয়ে রাখুন (সল্প সময়ের জন্য):
কয়েক ঘণ্টার জন্য লবণ দিয়ে রাখতে পারেন, তবে দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণে শুধু পরিষ্কার করে ফ্রিজে রাখা উত্তম।
টাইট প্যাক করুন:
মাছও বায়ুরোধী ব্যাগে রেখে সংরক্ষণ করুন। প্রয়োজন হলে প্রতিটি মাছ আলাদা করে প্যাক করতে পারেন।
বিদ্যুৎ না থাকলে করণীয়।
বরফ দিয়ে বালতি বা কুলার তৈরি করে সাময়িকভাবে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। সম্ভব হলে আশেপাশের আত্মীয় বা প্রতিবেশীর ফ্রিজে অস্থায়ীভাবে কিছু সংরক্ষণ করতে পারেন। খুব বেশি মাংস হলে আগে ভাগে আত্মীয়-পরিজনের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া উত্তম।
সংরক্ষিত মাংস ব্যবহারের সময় সতর্কতা
ফ্রিজ থেকে বের করে সম্পূর্ণ গলিয়ে নিন, তারপর রান্না করুন। পুনরায় জমিয়ে রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ফ্রিজে সাধারণ তাপমাত্রায় ৩–৪ দিন পর্যন্ত এবং ডিপ ফ্রিজে ৬ মাস পর্যন্ত মাংস সংরক্ষণ করা যায়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: জাতীয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (BFSA) জানিয়েছে, "মাংস ও মাছ সংরক্ষণে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি এবং পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত জরুরি। সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে খাদ্যে বিষক্রিয়া, পেটের অসুখসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে।"
সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন – এবং ঈদ উদযাপন করুন স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদভাবে।
মিরাজ খান