
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী জেলে পল্লীর বাসিন্দাদের জীবনযাত্রায় এসেছে দৃশ্যমান পরিবর্তন। দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙনের কবলে পড়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়া শত শত পরিবারের মুখে এখন স্বস্তির ছাপ। কারণ, সরকারি বরাদ্দে নির্মিত একটি নতুন বেড়িবাঁধ বদলে দিয়েছে এই অঞ্চলের ভাগ্য।
বিগত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টি ও কপোতাক্ষ নদে পানি বৃদ্ধির ফলে নিয়মিতভাবে প্লাবিত হয়ে আসছিল রাড়ুলী এলাকা। শুধু জেলে পল্লীই নয়, পাশের বসতভিটাগুলোর বাসিন্দারাও প্রতিবছর পানিবন্দি হয়ে পড়তেন। সরু, দুর্বল গ্রাম রক্ষা বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো।
যদিও মাঝে মাঝে সরকারি বরাদ্দ আসত, তবে তা ছিল অপ্রতুল ও অস্থায়ী ভিত্তিতে। ফলে এলাকার স্থায়ী সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিবছর বাড়ত গৃহহীন মানুষের সংখ্যা, দেখা দিত চরম আর্থিক সংকট।
অবশেষে বহু প্রতীক্ষার পর সরকারিভাবে রাড়ুলী কোমর উদ্দীন গাজীর বাড়ি থেকে রাড়ুলী ইউনিয়ন পরিষদের স্টিমার ঘাট পর্যন্ত শক্তিশালী বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও বালু ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তার কাজ প্রায় শেষ হলেও কিছু অংশে এখনও বালুর ডাম্পিং বাকি রয়েছে।
সোমবার (২ জুন) দুপুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কে রাত কাটালেও এখন তারা নিজেদের অনেকটাই নিরাপদ মনে করছেন। নদীর কোলঘেঁষে বসবাসকারী অনেকে পূর্বে ঘরবাড়ি হারিয়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তারা এখন সরকারি গুচ্ছগ্রামে বসবাস করছেন।
সর্বোপরি, এই বেড়িবাঁধ শুধু একটি অবকাঠামো নয়—এটি রাড়ুলীর মানুষের জন্য বাঁচার এক নতুন আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
ফরিদ