ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ব্যাংকিং ধস শুরু হয়ে গেছে, রবার্ট কিওসাকির সতর্কবার্তা, পরের ধাপ কী হতে পারে

প্রকাশিত: ১৯:৩১, ৩১ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:৩১, ৩১ মে ২০২৫

ব্যাংকিং ধস শুরু হয়ে গেছে, রবার্ট কিওসাকির সতর্কবার্তা, পরের ধাপ কী হতে পারে

ছবি:সংগৃহীত

‘রিচ ড্যাড পুয়র ড্যাড’ বইয়ের মাধ্যমে বিশ্বজোড়া জনপ্রিয়তা পাওয়া অর্থ-বিশেষজ্ঞ রবার্ট কিওসাকি আবারও একটি সতর্কবার্তা দিয়ে আলোচনায়।
তিনি সম্প্রতি এক্স (আগের টুইটার)-এ লিখেছেন: "ব্যাংকিং ধস শুরু হয়েছে। ওকলাহোমার একটি ব্যাংক বন্ধ হয়েছে। এবার লক্ষ্য রাখুন—বন্ড আর কমার্শিয়াল রিয়েল এস্টেটও পড়তে যাচ্ছে।"

এই ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী কিওসাকির নতুন কোনো কথা নয়। তিনি বহু বছর ধরেই মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন। তবে এবার তিনি একটি নির্দিষ্ট ঘটনার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

ঘটনাটি কী?
কিওসাকির পোস্টটি ওকলাহোমার একটি ছোট ব্যাংক—দ্য ফার্স্ট ন্যাশনাল ব্যাংক অব লিন্ডসি বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে লেখা।
১৮ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা OCC ব্যাংকটি বন্ধ করে দেয়। কারণ? অস্বচ্ছ ও প্রতারণামূলক হিসাব-নিকাশ। সোজা কথায়, ব্যাংকটি জালিয়াতির অভিযোগে ধরা পড়ে।

FDIC (Federal Deposit Insurance Corporation) দ্রুত হস্তক্ষেপ করে ব্যাংকের দায়িত্ব নেয় এবং গ্রাহকদের টাকা নিরাপদে রাখতে কাজ শুরু করে। তবু, প্রায় ৭.১ মিলিয়ন ডলার ছিল এমন কিছু আমানত, যেগুলো FDIC বীমার সীমার বাইরে। এর মানে, কিছু গ্রাহক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।

এটা ২০২৪ সালের দ্বিতীয় ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা। প্রথমটি ছিল ফিলাডেলফিয়ার রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক, যা এপ্রিল মাসে অর্থসংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। তবে মনে রাখতে হবে, লিন্ডসির এই ব্যাংকটি ছিল বেশ ছোট — মোট সম্পদ মাত্র ১০৭.৮ মিলিয়ন ডলার। ফলে এটি বড় কোনো আর্থিক সঙ্কটের ইঙ্গিত দেয় কিনা, সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না।

তাহলে কিওসাকির ভয়টা কোথায়?
কিওসাকি বলছেন, এরপর ধস নামতে পারে বন্ড মার্কেট ও কমার্শিয়াল রিয়েল এস্টেটে। তাঁর এমন আশঙ্কার পেছনে কিছু বাস্তব ভিত্তি আছে।

বন্ড মার্কেট:
ফেডারেল রিজার্ভ দীর্ঘদিন ধরে সুদের হার বাড়িয়ে রেখেছে। এর ফলে বন্ডের দাম কমে গেছে। যারা আগে কিনেছিলেন, তাঁদের জন্য এখন লোকসানের আশঙ্কা।

কমার্শিয়াল রিয়েল এস্টেট (অফিস ভবন, শপিং মল):
কোভিডের পর অনেক মানুষ এখনো বাড়ি থেকেই কাজ করছেন। এর ফলে বহু অফিস খালি পড়ে আছে। ভবন মালিকরা ভাড়া পাচ্ছেন না, ফলে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।

শেষ কথায়
রবার্ট কিওসাকির বার্তা শুনে কেউ ভয় পেতে পারেন, কেউ বলবেন — “আবার সেই পুরনো ভবিষ্যদ্বাণী!” তবে সত্যি কথা হলো, অর্থনীতি এখন এমন একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে সাবধান হওয়াটা খুবই দরকারি। ব্যাংকের মত প্রতিষ্ঠান হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া, বন্ডের দাম পড়ে যাওয়া, আর রিয়েল এস্টেট খাতে ভাটা – এসব কিন্তু হালকাভাবে নেয়ার মতো নয়।

সুতরাং, আপনি যদি বিনিয়োগ করেন বা সঞ্চয় নিয়ে ভাবছেন — এখনই সময় নিজের আর্থিক পরিকল্পনার দিকে একবার ভালো করে নজর দেওয়ার।

 নিরাপদ থাকুন। সতর্ক থাকুন। জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নিন।

মারিয়া

×