
ছবি: প্রতীকী
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ আজাদুর রহমান একটি ভিডিওতে দেনমোহর ও ভরণ-পোষণ আদায় সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়া ও স্বামীর দায়ভার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে যে স্ত্রী যদি স্বামীর বিরুদ্ধে দেনমোহর ও ভরণ-পোষণ আদায়ের জন্য মামলা করেন এবং সেই মামলায় স্ত্রীর পক্ষে রায় হয়, তাহলে কি স্বামীকে কোনো ধরনের সাজা দেওয়া হয়? থাকলে সাজার মেয়াদ কতদিন? এছাড়া সাজা খাটানোর পর দেনমোহর বা ভরণ-পোষণের বিক্রির টাকার আদায় কেমন হয়?
অ্যাডভোকেট আজাদুর রহমান জানান, আদালত সাধারণত মামলায় একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেন, যার মধ্যে স্বামীকে দেওনমোহর ও ভরণ-পোষণের টাকা পরিশোধ করতে হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি স্বামী টাকা পরিশোধ না করেন, তাহলে স্ত্রী মামলার মাধ্যমে ওই টাকা আদায়ের চেষ্টা করতে পারেন।
এই পারিবারিক জারি মামলায় স্বামীকে আবারও টাকা পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। অর্থাৎ, স্বামী একবারে পুরো টাকাটা দিতে না পারলে কিস্তিতে দিতে পারেন। কিস্তিতে টাকা পরিশোধের জন্য আদালতে আবেদন করতে হয় এবং আদালত আবেদন মঞ্জুর করলে টাকাটা কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ পাওয়া যায়।
তবে স্বামী যদি ডিক্রিতে ধার্যকৃত টাকাটা না দেন, তাহলে আদালত সর্বোচ্চ তিন মাস পর্যন্ত এককালীন সাজা দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে স্বামী যদি টাকা দিতে অস্বীকার করেন বা অপরাধ করেন, আদালত তার বিরুদ্ধে লেভি ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে পারেন এবং সর্বোচ্চ তিন মাসের সাজা প্রদান করতে পারেন।
এই তিন মাসের সাজা ভোগ করার পর কি স্বামীকে আর দায়িত্ব থেকে মুক্তি দেয়া হয়? আইনজীবীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যদি আদালত টাকাটা কিস্তিতে পরিশোধ করার নির্দেশ দেন এবং স্বামী প্রথম কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে সেই প্রথম কিস্তির জন্য সর্বোচ্চ তিন মাসের সাজা হতে পারে। এরপর যদি দ্বিতীয় কিস্তি না দেন, তাহলে আবারও তিন মাসের সাজা হবে। এভাবে যতবার কিস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হবেন, ততবার সাজা পেতে পারেন, তবে সর্বোচ্চ এককালীন সাজার মেয়াদ তিন মাস।
অ্যাডভোকেট আজাদুর রহমান আরও বলেন, তিন মাসের সাজা খাটানো হলেও দেনমোহর ও ভরণ-পোষণের টাকা আদায়ের অধিকার থাকেই। এ টাকা আদায়ের জন্য আরও বিভিন্ন আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায়, যা আদালত দেখভাল করে থাকে।
রাকিব