
ছবি: সংগৃহীত
আমাদের শরীর নিজের মতো করেই পরিশুদ্ধ হতে জানে। কিন্তু দূষণ, প্রক্রিয়াজাত খাবার বা অতিরিক্ত মানসিক চাপ এই প্রাকৃতিক শুদ্ধিকরণ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়, বিশেষত লিভার ও কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে। এদের প্রতিদিনের সঙ্গী করে তোলা যেতে পারে প্রকৃতির নিজস্ব উপহার—ফল। এখানে এমন ছয়টি ফলের কথা বলা হলো, যেগুলো লিভার ও কিডনিকে স্বাভাবিকভাবে ডিটক্স করতে সাহায্য করে।
১. জাম (জামুন)
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ এই ফলে রয়েছে এমন যৌগ, যা কিডনিতে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। উচ্চ রক্তে শর্করার কারণে কিডনির ক্ষতি ঠেকাতেও সাহায্য করে জাম। এটি শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে, ফলে লিভারের ওপর চাপ কমে।
টিপস: মৌসুমে প্রতিদিন একমুঠো জাম খাওয়াই যথেষ্ট।
২. ডালিম (অনারস/পোমেগ্রানেট)
ডালিম নীরবে কাজ করে কিডনি ডিটক্সে। এতে থাকা ‘পুনিক্যালাগিন’ নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমায় এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এমনকি ডায়ালাইসিস নেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রেও টক্সিন কমাতে এর ভূমিকা রয়েছে।
টিপস: প্রতিদিন এক বাটি ডালিমের দানা খেলে কিডনির জন্য আশ্চর্য রকম উপকারী হতে পারে।
৩. পেপে
পেপেতে রয়েছে প্যাপেইন নামক এনজাইম, যা প্রোটিন ভাঙতে সাহায্য করে এবং লিভারের ওপর চাপ কমায়। ফ্ল্যাভোনয়েড ও ভিটামিন C সমৃদ্ধ এই ফল ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমায়।
টিপস: আয়ুর্বেদসহ বহু প্রথাগত চিকিৎসাপদ্ধতিতে কাঁচা পেপে বা এর রস লিভার ডিটক্সে ব্যবহৃত হয়।
৪. ক্র্যানবেরি
এই ছোট ফলটি শুধু ইউরিনারি ইনফেকশনই নয়, বরং পুরো মূত্রতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এতে থাকা ‘প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিনস’ নামক যৌগ কিডনির কার্যকারিতা বজায় রাখে ও রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
টিপস: প্রতিদিন কিছু শুকনো ক্র্যানবেরি অথবা মিষ্টিহীন ক্র্যানবেরি জুস কিডনিকে সুরক্ষা দেয়।
৫. মৌসুমি (মিষ্টি লেবু)
মৌসুমি লিভারের জন্য অত্যন্ত মৃদু ও কার্যকর। এতে থাকা লিমোনয়েড যৌগ লিভারের এনজাইম সক্রিয় করে যা টক্সিন সরাতে সাহায্য করে। হজমে সমস্যা বা গ্যাস্ট্রিক প্রবণতায় এটি উপকারী।
টিপস: চিনিহীন ও নুনবিহীন মৌসুমি জুস প্রতিদিন পান করা যেতে পারে।
৬. তরমুজ
তরমুজ প্রাকৃতিক ডায়িউরেটিক, অর্থাৎ এটি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। এতে থাকা ‘সিট্রুলিন’ রক্তপ্রবাহ বাড়ায় ও শরীরে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ কমায়—যা লিভার ও কিডনিকে সাহায্য করে।
টিপস: চিনি ছাড়া ফ্রেশ তরমুজের রস বা টুকরো গরমকালে দারুণ উপকারী।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই ছয়টি ফলের যেকোনোটি অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের স্বাভাবিক ডিটক্স প্রক্রিয়া জোরদার হয়। কেমিক্যাল ডিটক্স বা কঠিন উপোসের চেয়ে এটি বেশি নিরাপদ, প্রাকৃতিক ও সুস্বাদু উপায়।
ফরিদ