
ছবি: সংগৃহীত
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর প্রতিটি অভ্যাস ও আচরণ মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়। তাঁর জীবনযাপন ছিল অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিমিত। তিনি শুধু হালাল খাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেননি, বরং যেসব খাবার হালাল হলেও নিজের বা অন্যের জন্য কষ্টকর, সেসব খাবার থেকেও বিরত থাকতেন। তাঁর এই নীতিকে আধুনিক স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা স্বীকৃতি দিয়েছেন অত্যন্ত যৌক্তিক ও স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস হিসেবে।
খাবার গ্রহণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন ব্যতিক্রমী রুচিশীল এবং সংযমী। শরীরের পরিপাকতন্ত্র বা শ্বাসতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর কিছুই তিনি আহার করতেন না। এমনকি যদি কোনো খাবার অপছন্দ করতেন বা খেতে আগ্রহ না পেতেন, তাহলে জোর করে খেতেন না।
হাদিসে বর্ণিত, আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু) বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কোনো খাবারের দোষ ধরেননি। ভালো লাগলে খেতেন, আর ভালো না লাগলে রেখে দিতেন।
তিনি আরও বলেন, মুমিন একটি অন্ত্র দিয়ে খায়, আর কাফের খায় সাতটি অন্ত্র দিয়ে।” এই হাদিসে অতিভোজনের ক্ষতি ও সংযমের শিক্ষা স্পষ্ট।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গরম খাবার খেতে পছন্দ করতেন না। অতিরিক্ত গরম যেসব খাবার থেকে ধোঁয়া উঠত, তা ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করতেন। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবীজি বলতেন, গরম খাবারে বরকত নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের আগুন খাওয়াননি। এই অভ্যাসে আজকের আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রও একমত, কারণ গরম খাবার মুখ, গলা ও পাকস্থলীতে ক্ষতি করতে পারে।
আরেকটি হাদিসে হযরত জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কাঁচা রসুন বা পেঁয়াজ খেয়ে কেউ যেন আমাদের মসজিদের ধারে-কাছে না আসে। মানুষ যেসব দুর্গন্ধে কষ্ট পায়, ফেরেশতারাও তাতে কষ্ট পান।” যদিও রান্না করা পেঁয়াজ-রসুন খাওয়া বৈধ, তবে কাঁচা অবস্থায় এগুলোর গন্ধ থাকলে নামাজের আগে তা এড়িয়ে চলার জন্য নবীজি কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন।
খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) একবার দব্ব (এক প্রকার গিরগিটি) সম্পর্কে প্রশ্ন করলে রাসূল (সাঃ) বলেন, এটি হারাম নয়, তবে যেহেতু আমাদের অঞ্চলে নেই, তাই আমার ভালো লাগে না।” যদিও এটি নবীর ব্যক্তিগত অপছন্দ, তবে হানাফি মাযহাব মতে দব্ব খাওয়া জায়েজ নয়।
ফরিদ