
ছবিঃ সংগৃহীত
ইদানীং রাত জাগার প্রবণতা বাড়ছে। যাঁরা দিনের পর দিন রাত জাগছেন, উল্লেখযোগ্য ভাবে তাঁদের বোধবুদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে। আর কী কী তথ্য জানা গেল?
দৈনন্দিন জীবনে ব্যস্ততার কারণেই বিশ্রামের পরিসর কমে আসছে। সময়ের অভাবে অনেকেই রাত জাগতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে ঘুমের সমসীমাও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে আসছে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রাত জেগে থাকার ফলে মানুষের ‘বোধবুদ্ধি’র উপর প্রভাব পড়ছে।
নেদারল্যান্ডসের ইউনিভার্সিট অফ গ্রোনিনজেনের গবেষকেরা গত ১০ বছর ধরে মানুষের বোধবুদ্ধি (কগনিশন) এবং ঘুমের সময় (স্লিপ সাইকেল) নিয়ে গবেষণা করেছেন। প্রকাশিত ফলাফল আশঙ্কাজনক। ৪০ বছরের বেশি বয়সের প্রায় ২৪ হাজার মানুষের উপরে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে গবেষণাটি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, যাঁরা ভোরে ওঠেন, তাঁদের তুলনায় যাঁরা রাত জেগে কাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বোধবুদ্ধি প্রতি বছর ০.৮ শতাংশ হারে কমেছে। মজার বিষয়, দেখা গিয়েছে, শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে এই হার অনেক বেশি। তার মধ্যে ছাত্র, শিক্ষক থেকে শুরু করে অফিসে কর্মরত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি।
সকাল বনাম রাত
দেহের নিজস্ব ‘ঘড়ি’ আমাদের সকালে ঘুম থেকে উঠতে এবং সারা দিনের পর রাতে ঘুমোতে যেতে শেখায়। কিন্তু বর্তমান সমাজে, ব্যস্ততার সঙ্গে পাল্লা দিতেই অনেককে রাজ জাগতে হয়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জীবনের মধ্যভাগ থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ রাত জেগে কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশ খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে দিন শুরু করেন। পেশাগত দায়বদ্ধতা যখন সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা দেহে ‘সোশ্যাল জেট ল্যাগ’ তৈরি করে। যাঁরা রাত জেগে কাজ করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সেটা আরও বেশি স্পষ্ট হয়।
অন্য দিকে যাঁরা তুলনামূলক ভাবে কম শিক্ষিত, দেখা গিয়েছে, ৯টা-৫টার ‘কঠিন’ রুটিনের পরিবর্তে তাঁঁরা দিনের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে কাজ ভাগ করে নিতে পারছেন। ফলে তাঁদের ক্ষেত্রে রাত জাগার প্রবণতাও অনেকটাই কম।
অনুঘটক কারা
গবেষণায় আরও তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। দেখা গিয়েছে, যাঁরা রাত জেগে কাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বোধবুদ্ধি হ্রাস পাওয়ার ক্ষেত্রে আরও দু’টি অভ্যাস অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে— ধূমপান এবং অনিদ্রা। এর মধ্যে শুধুমাত্র ধূমপানের প্রভাবই ১৯ শতাংশ! ছাড়াও অনিদ্রা তাঁদের শরীরে উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সব মিলিয়ে তাঁরা ‘ধূসর মস্তিষ্ক’-এর (ব্রেন ফগ) শিকার হয়েছেন। এই ধরনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অ্যালঝাইমার্সে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
ইমরান