ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দূষণের শহরে ফুসফুস বাঁচাতে ৫টি অভ্যাস জরুরি!

প্রকাশিত: ০২:৪৭, ১ জুন ২০২৫

দূষণের শহরে ফুসফুস বাঁচাতে ৫টি অভ্যাস জরুরি!

ছবি: সংগৃহীত

দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ফুসফুস। অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করে শরীরকে সচল রাখে এই অঙ্গদ্বয়। তবে দূষণ, ধূমপান, সংক্রমণ এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে দিন দিন বেড়ে চলেছে শ্বাসতন্ত্রের রোগ এবং ফুসফুসজনিত জটিলতা। অনেক সময় উপসর্গ না থাকলেও ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে ফুসফুস।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চললেই ফুসফুসকে সুস্থ রাখা সম্ভব এবং দীর্ঘস্থায়ী জটিল রোগ এড়ানো যায়। নিচে ফুসফুস ভালো রাখার জন্য পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ করণীয় তুলে ধরা হলো:

১. ধূমপান পরিহার করুন, ধোঁয়ার পরিবেশ থেকেও দূরে থাকুন
ধূমপান ফুসফুসের সবচেয়ে বড় শত্রু। এটি ফুসফুস ক্যানসার, সিওপিডি (COPD) ও অ্যাজমার ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। ধূমপান ছাড়াও পরোক্ষ ধোঁয়া (passive smoking) বা ধোঁয়াযুক্ত পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ থাকা অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই ধূমপান থেকে নিজেকে এবং আশপাশের মানুষকে দূরে রাখা জরুরি।

২. নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম করুন
দীর্ঘশ্বাস নেওয়া, শ্বাস ধরে রাখা ও ধীরে ধীরে ছেড়ে দেওয়ার মতো শ্বাসব্যায়াম ফুসফুসের সক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিট শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত হয় এবং শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি কমে।

৩. দূষণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করুন
বায়ুদূষণ বর্তমানে শহরাঞ্চলে ফুসফুসের বড় হুমকি। বিশেষ করে যানবাহনের ধোঁয়া, শিল্প কারখানার গ্যাস ও ধুলাবালি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে মাস্ক পরা অত্যন্ত কার্যকর। বাসাবাড়িতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং বায়ুচলাচল নিশ্চিত করাও জরুরি।

৪. সুস্থ ও পরিমিত খাদ্যগ্রহণ
ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ‘সি’, ‘ই’, বিটা ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম এবং প্রচুর পানি ফুসফুসকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। কেমিক্যালযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।

৫. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও টিকা গ্রহণ
শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘমেয়াদি কাশি বা বুকে চাপ অনুভব করলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো নিউমোনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা গ্রহণ করলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

জাতীয় শ্বাসরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, “বেশিরভাগ ফুসফুস রোগ ধীরে ধীরে শরীরে বাসা বাঁধে। সচেতন না হলে রোগ ধরা পড়ে দেরিতে। তাই আগে থেকেই সতর্ক হওয়া এবং নিয়মিত যত্ন নেওয়াই সবচেয়ে বড় প্রতিকার।”

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ফুসফুসের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একবার এই অঙ্গের বড় ক্ষতি হলে তা সহজে পূরণ হয় না। তাই এখনই সচেতন হন, নিয়ম মেনে চলুন—সুস্থ থাকুন।

ফারুক

×