
ছবি: সংগৃহীত
মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার। এটি শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করা, হজমে সহায়তা, শক্তি উৎপাদন এবং বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। তবে অনিয়মিত জীবনযাপন, ভেজাল খাদ্য, মদ্যপান ও ওষুধের অপব্যবহারের কারণে লিভারের রোগ দিন দিন বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চললেই লিভার সুস্থ রাখা সম্ভব। নিচে লিভার ভালো রাখার জন্য জরুরি পাঁচটি পরামর্শ তুলে ধরা হলো:
১. পুষ্টিকর ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ
লিভার ভালো রাখতে হলে সুষম খাদ্য খেতে হবে। চর্বিযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকতে হবে শাকসবজি, ফলমূল, আঁশযুক্ত খাবার ও কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন। প্রক্রিয়াজাত খাবার ও কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করা
লিভার ফ্যাট জমার অন্যতম কারণ স্থূলতা। তাই প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমে এবং ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ে, যা লিভারের জন্য উপকারী।
৩. অতিরিক্ত ওষুধ সেবন না করা
বিনা প্রয়োজনে পেইনকিলার, অ্যান্টিবায়োটিক বা হারবাল ওষুধ সেবন লিভারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন ওষুধ সেবন করলে লিভারে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে। ওষুধ গ্রহণে অবশ্যই সচেতন হতে হবে।
৪. মদ্যপান থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকা
লিভার নষ্টের সবচেয়ে বড় কারণগুলোর একটি হলো অ্যালকোহল সেবন। এটি সরাসরি লিভারের কোষ নষ্ট করে এবং সিরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই মদ্যপান পরিহার করাই লিভার সুস্থ রাখার অন্যতম শর্ত।
৫. হেপাটাইটিস থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা
হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের সংক্রমণ লিভারের দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ হতে পারে। তাই টিকা গ্রহণ, নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন ও সুরক্ষিত জীবনযাপন নিশ্চিত করতে হবে। সময়মতো পরীক্ষা করানো এবং ঝুঁকিপূর্ণ অভ্যাস এড়ানোও জরুরি।
বাংলাদেশ লিভার ফাউন্ডেশনের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, “লিভার রোগ নীরবে শরীরে বাসা বাঁধে। উপসর্গ না থাকলেও নিয়মিত পরীক্ষা করানো জরুরি। পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে পরিবর্তন এনে লিভারকে সুস্থ রাখা সম্ভব।”
সতর্কতা আর সচেতনতা—এই দুইই হতে পারে লিভার সুস্থ রাখার মূল চাবিকাঠি। সুস্থ লিভার মানেই সুস্থ জীবন। এখনই বদলান অভ্যাস, রাখুন লিভারের যত্ন।
ফারুক