
সংগৃহীত
সকাল থেকে শুরু করে দিনের ক্লান্ত মুহূর্তগুলোতে কফি যেন এক প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে কফি এখন শুধু পানীয় নয়, আধুনিক জীবনের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। তবে কফি পানের পাশাপাশি রয়েছে কিছু স্বাস্থ্যগত সুবিধা ও সতর্কতা, যা বিশেষজ্ঞরা বারবার উল্লেখ করছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিমিত কফি পানে মনোযোগ ও কর্মক্ষমতা বাড়ে, মানসিক চাপ কমে এবং কিছু রোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। তবে অতিরিক্ত কফি গ্রহণ ঘুমের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিকসহ অন্যান্য সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই তারা সবাই বলছেন, দৈনিক এক থেকে দুই কাপ কফি সেবন করা উচিত।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুষ্টিবিদ ডা. রাফসানা আক্তার বলেন, “কফি যখন নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খাওয়া হয়, তখন এটি শরীরের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত হলে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।”
কফির স্বাস্থ্য উপকারিতা
- কর্মক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি: ক্যাফেইনের কারণে স্নায়ুতন্ত্র উদ্দীপিত হয়, ক্লান্তি কমে।
- মন ভালো রাখে: ডোপামিন ও সেরোটোনিন হরমোন বাড়ায়।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ: কোষের ক্ষতি কমায়, বার্ধক্যজনিত রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- ডায়াবেটিস ও স্নায়ুবিক রোগ প্রতিরোধ: টাইপ-২ ডায়াবেটিস, আলঝেইমার ও পারকিনসন রোগের ঝুঁকি কমায়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: বিপাক হার বাড়িয়ে চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।
- লিভার ও হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সহায়তা: লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে।
কফির স্বাস্থ্যঝুঁকি
- ঘুমের ব্যাঘাত: রাতে কফি পানে অনিদ্রা দেখা দিতে পারে।
- উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দনের সমস্যা: ক্যাফেইনের অতিরিক্ত ব্যবহার রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন বাড়ায়।
- গ্যাস্ট্রিক ও অম্বলের সমস্যা: পাকস্থলীতে ব্যথা বৃদ্ধি করে।
- নেশাস্বরূপ অভ্যাস:অতিরিক্ত সেবনে অভ্যস্ততা সৃষ্টি হয়।
- গর্ভবতী ও শিশুদের জন্য ঝুঁকি: অতিরিক্ত ক্যাফেইন গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
ঘি কফি: আধুনিক স্বাস্থ্যকর পানীয়
বর্তমানে ঘি কফি বা বুলেটপ্রুফ কফির জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বাড়ছে। এতে দেশি ঘি ও কফি মিশিয়ে বানানো হয়, যা ওজন কমাতে, শক্তি বাড়াতে ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুষ্টিবিদ ডা. রাফসানা আক্তার বলেন, “ঘি কফি ভালো চর্বি ও ক্যাফেইনের সংমিশ্রণে তৈরি, যা দেহে ধীরে শক্তি দেয় এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরাট রাখে। তবে অতিরিক্ত সেবনে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে।”
ঘি কফির উপকারিতা:
- ওজন কমাতে সহায়তা
- শক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি
- হজম শক্তি উন্নত করা
- চিনিমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানো
- কিটোজেনিক ডায়েটের সঙ্গে মানানসই
সতর্কতা:
- বেশি খেলে ওজন বাড়তে পারে
- কোলেস্টেরল বা লিভারের সমস্যা থাকলে সাবধানতা জরুরি
- দিনে ১ কাপের বেশি না খাওয়া উত্তম
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কফি সাধারণ হোক বা ঘি কফি সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করলে শরীর ও মনের জন্য উপকারী। তবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে পরিমিত সেবন ও সচেতন থাকা জরুরি। কফির প্রতি ভালোবাসাকে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসে রূপান্তর করতে হবে সচেতনতার মাধ্যমে।
হ্যাপী