ছবি : জনকণ্ঠ
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মুক্ত সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। গত দশ মাসে মুক্তপ্রাণ অনেক সাংস্কৃতিক সংগঠক ও শিল্পী পরিকল্পিত মব সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে বিদায় দেওয়ার পর ভিন্ন চেহারায় নতুন ফ্যাসিবাদী চিন্তা, দর্শন ও সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এদেশের ঐতিহ্যবাহী লোকজ গণ-সংস্কৃতির ওপর ধারাবাহিক আক্রমণ চলছে। কোথাও কোথাও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় হামলা-আক্রমণের ঘটনাও ঘটছে।
কবি মোহন রায়হান বলেন, জন-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যারা গায়ের জোরে বিশেষ কোনো সংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে চায়, তারা আমাদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, নানা বৈচিত্র্যের মধ্যেই আমাদের ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতির বিকাশ ও বিস্তৃতি ঘটেছে।
তিনি উগ্রবাদ ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য হরণের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে একটি ন্যায্য, মানবিক, গণতান্ত্রিক এবং অসাম্প্রদায়িক গণ-সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সংগঠকদের প্রতি আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার বিকালে সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে সংহতি সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে সংগঠনের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এপোলো জামালীর স্মরণসভায় তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
সংগঠনের সভাপতি ইফতেখার আহমেদ বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন নারীনেত্রী বহ্নিশিখা জামালী, কবি মোহন রায়হান, ড. কাজী ইকবাল, চারনের সভাপতি নিখিল দাস, লেখক ও শিল্পী শাহানা জামালী, সাগরিকা জামালী, লেখক ও সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান নিযামী, শেখ মোহাম্মদ শিমুল, তিথি সুবর্ণা, রাশিদা বেগম, নীপা চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক প্রমুখ।
স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, অসহিষ্ণুতা, অনাকাঙ্ক্ষিত জঙ্গিবাদী হুমকি এবং সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি সমন্বিত কণ্ঠ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
প্রস্তাবে একটি সাম্যভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, সাম্যবাদী ও বহুস্বরভিত্তিক সাংস্কৃতিক পরিসরের দেশ গঠনে পারস্পরিক সহযোগিতা ও বোঝাপড়া গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হয়।
বক্তারা বলেন, গণ-সাংস্কৃতিক অভিযানের মধ্যেই এপোলো জামালী বেঁচে থাকবেন।
সভার শুরুতে প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এপোলো জামালীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং দাঁড়িয়ে তাঁর সংগ্রামী স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।স্মরণসভায় এপোলো জামালীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর রচিত গান পরিবেশন করেন তিথি সুবর্ণা ও রাশিদা বেগম। কবিতা আবৃত্তি করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সদস্যবৃন্দ।
সানজানা
