
ছবি:সংগৃহীত
চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ও বাইজিদ বোস্তামী এলাকায় সাম্প্রতিক অভিযানে উদ্ধার হওয়া ৪৫ হাজারেরও বেশি ইউনিফর্ম ঘিরে বাড়ছে সন্দেহ ও প্রশ্ন। গোয়েন্দা পুলিশের ভাষ্যমতে, এগুলো পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর জন্য তৈরি করা হচ্ছিল। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এত বিপুল পরিমাণ ইউনিফর্ম কেবল কেএনএফ-এর জন্য নয়, বরং এর পেছনে বৃহত্তর ও সংগঠিত কোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ইঙ্গিত থাকতে পারে।
গত ১৭ মে রাতের অভিযানে চট্টগ্রাম নগরীর বাইজিদ বোস্তামী থানার নয়ারহাট এলাকার একটি পোশাক কারখানা থেকে ২০ হাজার ৩০০টি ইউনিফর্ম উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ পর্যন্ত তিন দফা অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ৪৫ হাজারের বেশি ইউনিফর্ম।
পুলিশের দাবি, পোশাকগুলো কেএনএফ-এর জন্য তৈরি করা হচ্ছিল এবং প্রায় ২ কোটি টাকার একটি চুক্তির আওতায় এর অর্ডার নেওয়া হয়েছিল। তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বাইরে, সংশ্লিষ্ট পোশাক কারখানার কর্মীরা বলছেন ভিন্ন কথা।
একজন শ্রমিক বলেন,
“আমাদের এমডি স্যার বলছেন, এগুলো আমেরিকান এক আনসারের পোশাক, বাইরের অর্ডার। কাজ দেওয়ার পর আমরা ১৫, ১৬, ১৭ তারিখে সেলাই করি। কিন্তু ওরা মাল নেয়নি, টাকা দেয়নি। আমরাও নিজেরা বন্ধ করে দিয়ে পোশাকগুলো বাইরে রেখেছি।”
কেএনএফ মূলত বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের একটি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী 'বম' সম্প্রদায়কে ঘিরে গঠিত। নারী-পুরুষ মিলিয়ে এ সম্প্রদায়ের সংখ্যা মাত্র ১২ হাজার। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, এই ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এত বিপুল ইউনিফর্ম আদৌ প্রয়োজন কীভাবে হয়? এর পেছনে অর্থায়ন করল কারা? এবং এটি কোনো বড় আকারের গোপন সশস্ত্র গোষ্ঠীর অস্তিত্বের ইঙ্গিত কি না, তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ ও তদন্তের দাবি রাখে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল ইসলাম বলেন,
“শুধু কেএনএফ নয়, পার্বত্য অঞ্চলে অন্যান্য সশস্ত্র ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর দিকেও নজর দেওয়ার সময় এসেছে। এই অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করেও আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।”
ইতোমধ্যে পোশাক কারখানাটির মালিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে গোটা ঘটনায় এখনো নানা ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। ইউনিফর্মগুলোর প্রকৃত গন্তব্য, অর্থায়নকারী ও উদ্দেশ্য নিয়ে জোর তদন্ত চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য এটি এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।
সূত্র:https://youtu.be/iZ653RA6DSI?si=d8DQ7cXjBLBM4kaH
আঁখি