
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী আনন্দবাজার নৌঘাট কচুরিপানার তীব্র জটের কারণে নৌযান ও ট্রলার চলাচলে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন দুই পাড়ের ৩০ গ্রামের হাজারো মানুষ।গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে নদীপথে চলাচলের এই অচলাবস্থা যেন কোনো সমাধানের মুখ দেখছে না।
জানা যায়, বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক, চুয়াডাঙ্গা, টেকপাড়া, রগুনারচর, সবুজবাগ, গুচ্ছগ্রাম ও আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়ি, চৌদ্দমৌজা, মৈধ্যারচর, ইজারকান্দি, খাগকান্দা ও মেঘনা থানার চন্দনপুর, মৈশারচর, বরিকান্দি, নলচরসহ কয়েক উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ এ নৌঘাট দিয়ে চলাচল করে।
শত বছরের পুরাতন এ আনন্দবাজারে প্রতি শনিবার ও বুধবার হাট বসে। আশেপাশের কয়েক উপজেলার মানুষ এ হাট থেকে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করে। কিন্তু কচুরিপানার জন্য ক্রেতা আসতে পারছেন না বলে কেনাবেচা অনেক কম। কয়েক কোটি টাকার আর্থিক লোকসানের পথে ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কচুরিপানার কারণে আনন্দবাজার নৌঘাট এবং পার্শ্ববর্তী বৈদ্যেরবাজার নৌঘাটে নৌযান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। স্বাভাবিক যাতায়াতের জন্য মানুষকে ঘুরপথে যেতে হচ্ছে, এতে সময় ও অর্থ দুইয়েরই অপচয় হচ্ছে।
নদী পার হতে আসা স্থানীয় নুনেরটেক গ্রামের বাসিন্দা মো. হজরত আলী জানান, "গত কয়েকদিন ধরে আনন্দবাজার নৌঘাটের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। কচুরিপানার কারণে নৌযান স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। এতে করে আমাদের যাতায়াতে প্রচণ্ড সমস্যা হচ্ছে।"
স্থানীয় মুরব্বী আ: কাদির মেম্বার মজার ছলে বলেন, "এখন আনন্দবাজার নৌঘাট পার হওয়া চোরাইপথে লিবিয়া যাওয়ার মতো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।"
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ)-এর এক কর্মকর্তা বলেন, “আনন্দবাজার নৌঘাটে কচুরিপানার কারণে নৌযান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে এটা আমরা জানি। তবে এটা তাদের অবৈধ ছোপ দেওয়ার কারণে তৈরি হয়েছে। তারা নিজেরাই এ সমস্যা সৃষ্টির কারণ। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি এবং দ্রুত কীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।”
এদিকে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। নৌপথের এই অচলাবস্থা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে তা স্থানীয় অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় আরও গভীর প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আনন্দবাজার হাটের ইজারাদার মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, আমাদের এ হাটের কচুরিপানার সমস্যা দীর্ঘদিনের। কিছু মানুষ নদীতে ছোপ দেওয়ার কারণে নৌঘাটে ট্রলার চলাচলের এ অচলাবস্থা তৈরি হয়। আমরা চেষ্টা করছি প্রশাসনের সহায়তায় কীভাবে এর স্থায়ী সমাধান করা যায়।
আফরোজা