ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

৯টি দৈনন্দিন অভ্যাস যা আপনার মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ২৮ মে ২০২৫

৯টি দৈনন্দিন অভ্যাস যা আপনার মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

আমাদের প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস অজান্তেই ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত করছে আমাদের মস্তিষ্ককে। গবেষণা বলছে, এইসব অভ্যাস শুধু স্মৃতিশক্তিই নয়, প্রভাব ফেলছে মনোযোগ, বুদ্ধিমত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউরোসায়েন্টিস্ট ড. লিসা মস্কোনি (Dr. Lisa Mosconi), যিনি নিউইয়র্কের উইল-কর্নেল মেডিসিনে "Women's Brain Initiative" পরিচালনা করছেন, বলেন— “মস্তিষ্ক হচ্ছে শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অঙ্গ। আপনি কী খান, কত ঘুমান, কতটা পানি খান বা মানসিক চাপ কতটা— সবকিছুর সরাসরি প্রভাব পড়ে আপনার মস্তিষ্কের উপর।”

চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই ৯টি ক্ষতিকর অভ্যাস, যেগুলো আমাদের মস্তিষ্ককে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত করছে:

🛌 ১. ঘুমের ঘাটতি

ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে পুনরুজ্জীবিত করে। প্রতিরাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে স্নায়ু কোষের পুনর্গঠন ব্যাহত হয়, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়।

📱 ২. অতিরিক্ত মোবাইল/স্ক্রিন ব্যবহারের অভ্যাস

সারাদিন মোবাইল, ল্যাপটপে ডুবে থাকা আপনার মনোযোগ এবং ফোকাস ক্ষমতা হ্রাস করে। বিশেষ করে রাতের বেলা স্ক্রিনের আলো মস্তিষ্কের ঘুম হরমোন মেলাটোনিনকে বাধাগ্রস্ত করে।

🍔 ৩. প্রসেসড ও জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতা

বেশি চিনি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং প্রিজারভেটিভে ভরা খাবার মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এটি স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও মানসিক অবসাদে ভূমিকা রাখে।

🚫 ৪. পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া

মস্তিষ্কের ৭৫% পানি দিয়ে তৈরি। ডি-হাইড্রেশন মনোযোগ ও চিন্তার উপর প্রভাব ফেলে।

😡 ৫. অতিরিক্ত মানসিক চাপ

দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস মস্তিষ্কে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়ায়, যা নিউরনের ক্ষয় বাড়ায়।

🚶 ৬. শারীরিক কার্যকলাপের অভাব

নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়াম রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে। নড়াচড়াহীন জীবনধারা নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

🍻 ৭. অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা ধূমপান

এগুলো নিউরনের মৃত্যু ঘটায় এবং ব্রেইনের কমিউনিকেশন সিস্টেমে সমস্যা তৈরি করে।

😶 ৮. সামাজিক বিচ্ছিন্নতা

মানুষ সামাজিক প্রাণী। একাকীত্ব ও সামাজিক যোগাযোগের অভাব মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে এবং ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়ায়।

❌ ৯. নতুন কিছু শেখার অনীহা

মস্তিষ্কে নিউরোপ্লাস্টিসিটি বজায় রাখতে হলে নতুন কিছু শিখতে হবে। পড়া, লেখালেখি, ভাষা শেখা— এগুলো মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে।

🧠 বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: ড. লিসা মস্কোনি বলেন, “Brain health starts in your everyday habits. ছোট ছোট পরিবর্তন বড় ফলাফল দিতে পারে। নিয়মিত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাদ্য, পর্যাপ্ত পানি পান ও মানসিক প্রশান্তি— এগুলোই হতে পারে ব্রেইনের সবচেয়ে বড় সুরক্ষা।”

আপনি কি এই অভ্যাসগুলোর কোনোটিতে অভ্যস্ত? এখনই সময় নিজেকে পরিবর্তনের। ভালো থাকুন, সচেতন থাকুন। মস্তিষ্ককে ভালোবাসুন।

আসিফ

×