
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের মন্ডলাদান গ্রামের দুই যুবক জুয়েল রানা ও শিপন ইউটিউব দেখে শিখে বাড়ির আঙিনায় বাঁশের মাচায় আঙুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা সবুজ আঙুর এখন তাদের পরিবারের পাশাপাশি এলাকার মানুষের মধ্যেও নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
প্রায় ১০ মাস আগে তারা পরীক্ষামূলকভাবে বাড়ির উঠোনে বাঁশের মাচায় ৫টি আঙুর গাছ রোপণ করেন। বগুড়া জেলার এক কৃষকের কাছ থেকে বিদেশি জাতের চারা সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেন তারা। এর মধ্যে ৪টি গাছে ফলন এসেছে এবং প্রতিটি থোকায় ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত ফল হয়েছে। এবার তারা প্রত্যাশা করছেন ৩০ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত ফল পাওয়া যাবে।
জুয়েল রানা ও শিপন জানান, “সাধারণত ৮০ থেকে ৮৫ দিনেই আঙুর খাওয়ার উপযোগী হয়। এখন যে ফল দেখছেন, তা দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই খাওয়া যাবে। প্রথম দিকে মানুষ উপহাস করত, কেউ কেউ পাগলও বলত। কিন্তু এখন প্রতিদিন বহু মানুষ আমাদের আঙুর দেখতে আসছেন। আমরা খুবই খুশি।”
তারা আরও জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, তবে এখন খরচ খুবই সামান্য। “কোনো মানুষের কাছ থেকে শুরুতে সহযোগিতা পাইনি। তবে এখন স্থানীয় কৃষি অফিস ও সাধারণ মানুষ সবাই পাশে আছে,” বলেন তারা। ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষে নামার পরিকল্পনা করছেন জুয়েল ও শিপন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুবাস চন্দ্র রায় বলেন, “গত বছর তারা ৫টি চারা দিয়ে আঙুর চাষ শুরু করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আমরা তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। আশা করি, তাদের হাত ধরেই এই অঞ্চলে আঙুরের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হবে।”
বিদেশি এই ফল যে বাংলাদেশের মাটিতেও সুস্বাদুভাবে ফলানো সম্ভব, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন জুয়েল ও শিপন। তাদের সাহসী উদ্যোগ এখন এলাকার তরুণদের কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।
ফরিদ