
ভোলার চরফ্যাশনে ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে অতি প্লাবনে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর, চরনিজাম, কুকরী, চর পাতিলা, মুজিব নগর সিকদারের চরে প্রবল বাতাস ও জোয়ারের তোরে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে ৩০০ বসত ঘর। জোয়ারে ভেসে গেছে কৃষকের প্রায় ৭০০ গবাদিপশু। বিধ্বস্ত ঘরের নীচে চাপা পড়ে অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চরফ্যাশনের উপকুলে সর্বত্র প্রবল গতির ঝড়টি বয়ে যায়। ঘূর্ণীঝড় শক্তির প্রভাবে মেঘনা ও তেঁতুলীয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঢেউর তোরে ভেসে যায় বাঁধরক্ষা সংরক্ষণ প্রকল্পের ব্লকের জিউ ব্যাগ। প্লাবিত হয়ে পরে নিম্মাঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়ন। আশ্রয়হীন হয়ে পরেছে কয়েকশ পরিবার। শুক্রবার বিকালে উপজেলা প্রশাসন সুত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।জানাগেছে, অবস্থানগত কারণে ঘূর্ণীঝড় শক্তির থাবার মুখে পরেছে চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর, চরনিজাম ও কুকরী মুকরী ইউনিয়ন এবং মুজিব নগর, সিকদারের চর ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ। নদী-সাগর উত্তাল হয়ে উঠায় দ্বীপ ছেড়ে অন্যত্র সরে যাওয়ার কোন উপায়ও না পেয়ে বাধ্য হয়েই আশ্রয়ে ছিলেন নিজেদের বসত ঘরে। বঙ্গোপসাগর মোহনার দ্বীপ ইউনিয়ন ঢালচর ও কুকরী-মুকরী এবং তেঁতুলিয়া নদী পাড়ের মুজিব নগর ইউনিয়ন মূলভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এসব ইউনিয়ন ও সংলগ্ন চরাঞ্চলের ৩০ হাজার মানুষ ঘুর্ণিঝড়ের থাবার মুখে পরেছেন। এসব ইউনিয়নে বিধ্বস্ত হয়েছে আবাসন প্রকল্পের ঘর, স্কুল, মাদ্রাসাসহ প্রায় ৩ শতাধিক বসত ঘর। অতি জোয়ারে ভেসে গেছে কৃষকের গরু, মহিষসহ প্রায় ৭০০ গবাদি পশু।
ঢালচর ইউনিয়ন পিপিসির টিম লিডার মো. মঞ্জু জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাতভর ঘূর্ণিঝড় শক্তির তান্ডবে ঢালচর ইউনিয়নের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বাতাসের তোরে ঢালচরসহ কুকরী মুকরী, চর পাতিলা মুজিব নগর ইউনিয়নের ৩০০ শতাধিক ঘর বাড়ি বিধস্ত হয়। আশ্রয়হীন হয়ে পরেছে হতদরিদ্র পারিবার গুলো। সংকট দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির। দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রান বিতরন করা না হলে সংকটে পড়বে দূর্গত দ্বীপের মানুষ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি জানান, শুক্রবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে শুকনা খাবার ও ত্রান বিতরন শুরু করা হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার ঢালচর, কুকরী মুকরী, চর পাতিলাসহ বিভিন্ন গ্রামে সাধারন মানুষের ৩ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাছপালা ও ক্ষেতের ফসল। ভেসে গেছে ঘেরের মাছ। সরকারি ভাবে ৪ শ পবিবারকে আজকে আমরা ত্রান দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাতে ৩০ কেজি চাল ও ডাল-আলু-তেল চিড়াসহ শুকনো খাবার প্যাকেট বিতরন কাজ চলমান রয়েছে। তার মধ্যে ঢালচরে ২শ, মুজিবনগরে ১শ এবং কুকরীতে ১শ পর্যাপ্ত ত্রান মুজুত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিতরন করা হবে।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চরফ্যাশনে তিনদিন যাবত বিদ্যুৎ নেই। এখনো গুঁড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
রাজু