ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমে যে কোনও মুহূর্তে তিস্তা বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী

প্রকাশিত: ০০:১৮, ১ জুন ২০২৫; আপডেট: ০০:২১, ১ জুন ২০২৫

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমে যে কোনও মুহূর্তে তিস্তা বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে

ছবিঃ সংগৃহীত

উত্তর সিকিমের পাহাড়ে চলছে মেঘভাঙ্গা বৃষ্টি। তার জেড়ে তিস্তা নদীর পানি হু-হু করে বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন শুক্রবার (৩০ মে) রাতের পর শনিবার (৩১ মে) সন্ধ্যা থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে ব্যাপক বৃষ্টি। সেই পানি পাহাড় থেকে ধেয়ে সমতলে ছুটে আসছে। ফলে শোঁশোঁ শব্দে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদী গর্জে উঠছে। ফলে তিস্তা নদীতে লাল সংকেত জারি করেছে ভারত।

শনিবার (৩১ মে) বিকাল ৬টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৫১.২৭ সেন্টিমিটার পরিমাপ করা হলেও রাত ৯টায় সেই পানি আরও ৬৫ সেন্টিমিটার বেড়ে দাঁড়ায় ৫১.৯২ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টে বিপদ সীমা ৫২.১৫ সেন্টিমিটার। ফলে তিস্তার পানি বিপদ সীমার মাত্র দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। 

তিস্তাপাড়ের মানুষজন জানান, এদিকে বৃষ্টিপাত না থাকলেও উজানে টানা বৃষ্টি চলছে। সেই ঢলে ইতোমধ্যে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে।

তবে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে রাতে লিখেছেন রাত ১১টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেটে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত শুরুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে তিনি সিকিম পাহাড়ে ও আসামে ভারী বৃষ্টিপাতের আগাম সর্তকতা দিয়েছিলেন। যা বর্তমানে চলমান।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড এর বন্যা ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এবং ডালিয়াস্থ তিস্তার পানি পরিমাপক গেজ রিডার নুরুল ইসলাম জানান, তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। উজানের ঢল প্রচন্ডভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কোন সময় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেশ্বর, খগাখরিবাড়ি ইউনিয়নের দোহল পাড়া, টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নের চর খড়িবাড়ি, খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা, বাইশ পুকুর, ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের কেল্লাপাড়ার, গোলমুন্ডা, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, আদিতমারী, কালিগঞ্জ, রংপুরের গঙ্গাচরা, কাউনিয়া এলাকায় তিস্তার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পানি বাড়ায় ওই সকল এলাকার বসবাসকৃত পরিবারগুলো নিরাপদে আশ্রয় নিচ্ছে।

কেল্লাপাড়ার হামিদুল ইসলাম বলেন, যে হারে তিস্তার পানি বাড়ছে এবার বন্যা ভালই দেখা দিতে পারে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে চর এলাকার বসতবাড়ি ও চলাচলের রাস্তা তলিয়ে যেতে শুরু করেছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানের চলমান ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। যে হারে পানি বাড়ছে তাকে যে কোন সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে আমরা তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে। আমরা নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষজনকে নিরাপদে সরে থাকতে বলা হয়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নদী অববাহিকায় অবস্থান নিয়ে নজরদারী করছি।

ইমরান

×